পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ।
৩৪১

মুসলমান-বিজেতৃগণকে বিশেষ চেষ্টা করিতে হইয়াছিল। আজমীর জয় করিতে দুইটি স্বতন্ত্র অভিযানের আবশ্যক হইয়াছিল। পৃথ্বীরাজের মৃত্যুর পর তাঁহার ভ্রাতা হেমরাজ আমরণ রাজধানী রক্ষা করিয়াছিলেন,[] এ কথা মুসলমান ঐতিহাসিকগণও স্বীকার করিয়াছেন। বিজেতৃগণ আজমীর অধিকার করিয়া পৃথ্বীরাজের দাসী-পুত্রকে সিংহাসন প্রদান করিয়াছিলেন। সুলতান মহম্মদের প্রতিনিধি কুতব্-উদ্দীনকে পুনরায় আজমীর জয় করিতে হইয়াছিল। দিল্লী ও আজমীর হস্তগত করিয়া সুলতান মহম্মদ বিস্তৃত সমৃদ্ধ গাহডবাল-রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন। কথিত আছে যে, কান্যকুব্জ-রাজ জয়চ্চন্দ্র সংযুক্তা-হরণের জন্য চাহমান-রাজের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হইয়াছিলেন এবং তিনি মুসলমান-রাজের সহিত সন্ধিবন্ধনে আবদ্ধ হইয় একই সময়ে পৃথ্বীরাজের রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন। ইহার পুরস্কারস্বরূপ গোর-রাজ মহম্মদ-বিন-সাম পরবৎসর গাহডবাল-রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন। তাজ্-উল্-মাসির, তবকাত্-ই-নাসীরী এবং কামিল-উৎ-তবারিখ্ নামক ইতিহাসত্রয়ে গোর-রাজ কর্ত্তৃক কান্যকুব্জ-রাজ্য বিজয়ের বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে। ইহার মধ্যে সদর-উদ্দীন মহম্মদ-বিন-হসন নিজামীর তাজ-উল্-মাসির গ্রন্থ কান্যকুব্জ-রাজ্য জয়ের একাদশ বর্ষ পরে আরব্ধ হইয়া ১২২৮ খৃষ্টাব্দে শেষ হইয়ছিল। তাজ্-উল্-মাসিরের বিবরণ এই গ্রন্থত্রয়ের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা বিশদ[]

 “কিয়ৎকাল দিল্লীতে অবস্থান করিয়া কুতব্-উদ্দীন ৫৯০ হিজিরাব্দে (১১৯৪ খৃষ্টাব্দে) পবিত্র-সলিলা জূন (যমুনা) নদী পার হইয়া কোল ও

  1. Elliott’s History of India, Vol II, p. 225.
  2. Ibid, pp. 215-35.