নাই। পৃথ্বীরাজের মৃত্যুর পরে যখন দলে দলে আফগান ও তুরস্ক-সেনা উত্তরাপথ আচ্ছন্ন করিতেছিল, যখন অতি প্রাচীন চিরস্মরণীয় রাজবংশসমূহের পতন-সংবাদ প্রতিদিন শ্রুত হইত, তখন কাশী-কুশীকোত্তর-ইন্দ্রস্থান প্রভৃতি তীর্থ-সমন্বিত বিশাল গাহডবাল-সাম্রাজ্যের বিস্তৃত সীমান্ত রক্ষা করা যুদ্ধ-বিদ্যায় পক্বকেশ সেনাপতির পক্ষেও দুরূহ ছিল। এই অবস্থায়, পিতার মৃত্যুর পরে, ছয় বৎসরকাল, হরিশ্চন্দ্র কিরূপে স্বাধীনতা রক্ষা করিয়াছিলেন তাহা অদ্যাপি জানিতে পারা যায় নাই। কিন্তু ইহা স্থির যে, ১২০০ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত হরিশ্চন্দ্রদেব উত্তরাপথের একজন স্বাধীন নরপতি ছিলেন। ১২৫৩ বিক্রমাব্দে হরিশ্চন্দ্রদেব পমহৈ গ্রাম জনৈক ব্রাহ্মণকে দান করিয়াছিলেন[১]। এই তাম্রশাসনখানি তিন বৎসর পরে, ১২৫৭ বিক্রমাব্দে (১২০০ খৃষ্টাব্দে) সম্পাদিত হইয়াছিল[২]। ইহার পরে হরিশ্চন্দ্রদেবের অস্তিত্বের আর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। এই তাম্রশাসন হইতে প্রমাণ হইতেছে যে, জয়চ্চন্দ্রদেবের মৃত্যুর পরে সমস্ত গাহডবাল-সাম্রাজ্য মহম্মদ-বিন-সামের পদানত হয় নাই। জয়চ্চন্দ্রের পুত্র যথাসাধ্য আত্মরক্ষার চেষ্টা করিয়াছিলেন। গাহডবাল-সাম্রাজ্যের রাজধানী কান্যকুব্জ নগর সুলতান শমস্উদ্দীন আল্তামশের রাজত্বকালে মুসলমানগণ কর্ত্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল। আল্তামশ কান্যকুব্জ-বিজয় স্মরণার্থ নূতন প্রকারের রজতমুদ্রা মুদ্রাঙ্কণ করাইয়াছিলেন[৩]। মিনহাজ-উস-সিরাজ প্রণীত তবকাৎ-ই-নাসীরীতে কথিত আছে যে, আল্তামশের রাজত্বকালে লক্ষাধিক মুসলমান-নিহন্তা
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৬৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।