পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ
৩৪৫

অযোধ্যাবাসী বর্ত্তু বা বৃতু পরাজিত ও নিহত হইয়াছিলেল[১]। এই সমস্ত প্রমাণ হইতে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, জয়চ্চন্দ্রের মৃত্যুর পরেই গাহডবাল-বংশের অধিকার শেষ হয় নাই এবং মুসলমানগণ গঙ্গার দক্ষিণ তীরবর্ত্তী ভূখণ্ড মাত্র অধিকার করিয়াছিলেন। গঙ্গার দক্ষিণতীরেও কান্যকুব্জ-রাজের সামন্তগণ ১১৯৭ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত মুসলমানগণের অধীনতা স্বীকার করেন নাই। ১২৫৩ বিক্রমাব্দে (১১৯৭ খৃষ্টাব্দে) চুনারের আট ক্রোশ দূরবর্ত্তী বেলখরা গ্রামে কান্যকুব্জরাজের সামন্ত রাণক বিজয়কর্ণ স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখিয়াছিলেন[২]। উক্ত বর্ষে রাউত শকরুক একটি শিলাস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। এই স্তম্ভলিপিতে হরিশ্চন্দ্রদেবের নাম নাই। “শ্রীমদ্ধরিশ্চন্দ্রদেবস্য বিজয়রাজ্যে” ইত্যাদি পদের পরিবর্ত্তে “শ্রীমদ্‌কন্যকুব্জ বিজয়রাজ্যে” পদ ব্যবহৃত হইয়াছে। এতদ্দ্বারা সূচিত হইতেছে যে, কান্যকুব্জের গাহডবাল-বংশের অধিকার তখন ধ্বংসোন্মুখ, মধ্যবর্ত্তী ভূভাগ মুসলমান কর্ত্তৃক অধিকৃত হওয়ায় রাণক বিজয়কর্ণ জানিতে পারেন নাই যে, জয়চ্চন্দ্রের পুত্র হরিশ্চন্দ্র তখনও জীবিত আছেন এবং কান্যকুব্জ নগর তখনও শত্রুহস্তগত হয় নাই। স্বামিভক্ত বিজয়কর্ণ তখনও গাহডবাল-বংশের স্বামিত্ব অস্বীকার করেন নাই এবং সেই জন্যই “শ্রীমদ্‌কন্যকুব্জবিজয়রাজ্যে” পদ ব্যবহার করিয়া গিয়াছেন।

 গোবিনচন্দ্রের পুত্র বিজয়চন্দ্র মগধ ও করুষদেশের অধিকাংশ স্বীয় অধিকারভুক্ত করিয়া লইয়াছিলেন। এই সময়ে রোহিতাশ্ব দুর্গের নিকটস্থিত জাপিল গ্রামের মহানায়কগণ প্রবল হইয়া উঠিয়াছিলেন।

  1. Tabaqat-i-Nasiri, (Raverty’s Trans.) pp. 628-29.
  2. Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal, New Series, Vol. VII, p. 763, pl. X.