ও বিক্রমশিলা-বিহারের শত শত বর্ষব্যাপী যত্নে সংগৃহীত অমূল্য পুস্তকরাজি ভস্মীভূত হইয়াছিল। মগধ-বিজয়ের পঞ্চ শত বর্ষ পরে লামা তারানাথ তুরুস্কজাতীয় মুসলমান-ধর্ম্মাবলম্বী বিজেতৃগণ কর্ত্তৃক প্রাচীন উদ্দণ্ডপুর ও বিক্রমশিলা বিহারের ধ্বংসকাহিনী লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন[১]। বিজেতৃগণের অত্যাচারে দলে দলে নর-নারী মগধ পরিত্যাগ করিয়া নিকটবর্ত্তী পর্ব্বতসঙ্কুল প্রদেশের হিন্দুরাজ্যে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিল। বৌদ্ধধর্ম্মের প্রতি মুসলমানগণের যত বিদ্বেষ ছিল, হিন্দুধর্ম্মের প্রতি তত অধিক ছিল না। এই সময়ে মধ্য এসিয়াবাসী বৌদ্ধধর্ম্মাবলম্বী তুরুস্কজাতি আরবগণের সাম্রাজ্য ধ্বংসার্থ অগ্রসর হইতেছিল। মুসলমানগণ বার বার পরাজিত হইয়া পশ্চাৎপদ হইতেছিলেন। মগধ বিজয়ের অর্দ্ধ শতাব্দী মধ্যে মুসলমান-সাম্রাজ্যের রাজধানী বোগ্দাদ নগর বৌদ্ধধর্ম্মাবলম্বী হুলাগু খাঁ কর্ত্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল এবং আরবজাতীয় শেষ সম্রাট্ মুস্তাসিম্ বিল্লা নৃশংসভাবে নিহত হইয়াছিলেন[২]। এই জন্যই খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগে এসিয়াবাসী মুসলমানগণ বৌদ্ধগণের প্রতি অত্যন্ত বিদ্বেষভাবাপন্ন হইয়া উঠিয়াছিলেন। মুসলমানগণের অত্যাচার-ভয়ে বৌদ্ধভিক্ষুকগণ অমূল্য ধর্ম্মগ্রন্থনিচয় ও দেবমূর্ত্তিসমূহ সঙ্গে লইয়া নেপালে পলায়ন করিয়াছিলেন। এই জন্যই নেপালে পাল-রাজগণের রাজত্বকালে লিখিত বহু বৌদ্ধ-গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে।
১১৭০ খৃষ্টাব্দের পরে ১২০০ খৃষ্টাব্দের পূর্ব্বে লক্ষ্মণসেনের পুত্রত্রয় গৌড়-সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। ইঁহাদিগের নাম মাধবসেন, বিশ্বরূপসেন ও কেশবসেন। ইঁহাদিগের প্রত্যেকের এক একখানি