আর্য্যগণের বাসযোগ্য বলিয়া গণ্য হয়। বৈদিক-সাহিত্যে এই সকল উল্লেখ হইতে অনুমান হয় যে, সেই সময়ে অঙ্গ, বঙ্গ, মগধ, মিথিলা প্রভৃতি উত্তরাপথের পূর্ব্বসীমান্তস্থিত প্রদেশসমূহ নবাগত আর্য্যজাতির নিকট পরিচিত ছিল, কিন্তু তাহাদিগের অধিকারভুক্ত ছিল না। শতপথ ব্রাহ্মণে মিথিলার উল্লেখ দেখিয়া বোধ হয় যে, সেই সময়ে মিথিলায় আর্য্য-উপনিবেশ স্থাপিত হইয়াছিল, অথবা মিথিলা আর্য্যগণ কর্ত্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল[১]।
আর্য্যাবর্ত্তের পূর্ব্বসীমান্ত যখন আর্য্যোপনিবেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল না, তখন এই সকল দেশ কোন্ জাতির বাসস্থান ছিল? ঐতরেয় আরণ্যকে বঙ্গ ও মগধবাসিগণের সহিত চেরদেশবাসিগণের অথবা চেরজাতির উল্লেখ দেখিয়া বোধ হয় যে, আর্য্যগণ যাহাদিগকে পক্ষিজাতীয় মনুষ্য মনে করিতেন, তাহারা একই বংশসম্ভূত জাতি। মধ্যপ্রদেশের পার্ব্বত্য উপত্যকা সমূহে যে সমস্ত বর্ব্বরজাতি অদ্যাবধি আপনাদিগকে চেরো বা চেরুবংশসম্ভূত বলিয়া পরিচয় দিয়া থাকে, তাহারা আর্য্য বংশজাত নহে। নৃতত্ত্ববিদ্ পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে, তাহারা দ্রবিড়জাতীয়।
দ্রবিড়জাতি বহুকাল পূর্ব্বে ভারতবর্ষ অধিকার করিয়াছিলেন, তাঁহাদিগের ভাষা অনার্য্য, বর্ত্তমান সময়ে তাঁহারা মধ্যভারতে ও দাক্ষিণাত্যে বাস করিয়া থাকেন। দ্রাবিড় বা ডামিলভাষা এক্ষণে তামিল, তেলেগু, কাণাডা ও মলয়ালম এই চারিটি প্রধান ভাগে বিভক্ত। এতদ্ব্যতীত মধ্যভারতের পার্ব্বত্য উপত্যকাসমূহে ও বালুচিস্তানে, দ্রাবিড়ভাষার বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাখা অদ্যাপি প্রচলিত আছে। ভারতের উত্তর-পশ্চিম-সীমান্তে বালুচিস্তানের ব্রহুইজাতি দ্রবিড়জাতীয় ভাষা ব্যবহার করিয়া থাকে; ইহা হইতে ভাষাতত্ত্ববিদ্গণ অনুমান করেন যে,
- ↑ শতপথ ব্রাহ্মণ ২।১।১।