ইহা আদাদের সেবক লিবুরবেলীনামক কোন ব্যক্তির মুদ্রা। কীলকলিপির শেষভাগ ক্ষয় হইয়া গিয়াছে, আদাদের নাম ইহাতে পাঠ করা যায় না, তবে খোদিতলিপির পার্শ্বে আদাদের মূর্ত্তি দেখিয়া স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, এইস্থানে দেবতা আদাদের নাম ছিল। “লিবুরবেলী” বাবিরুষীয় ভাষায় “ঈশ্বর বলবান্ হউন” বুঝায়। এই কীলকলিপি অনুমান দুই হাজার খৃষ্টপূর্ব্বাব্দে খোদিত হইয়াছিল। এই সময় প্রাচীন বাবিরুষে প্রাচীন রাজবংশের অধিকার কাল[১]। মধ্যভারতে এই কীলকলিপির আবিষ্কার, পণ্ডিতপ্রবর হলের উক্তির যাথার্থ্য প্রমাণিত করিতেছে। দাক্ষিণাত্যে পাষাণনির্ম্মিত প্রাচীন সমাধিস্থান খননকালে মৃন্ময় শবাধারে মনুষ্যের শব আবিষ্কৃত হইয়াছে[২]। এই জাতীয় শবাধার প্রাচীন বাবিরুষের ধ্বংসাবশেষ মধ্যেও আবিষ্কৃত হইয়াছে[৩]।
এই সকল আবিষ্কার হইতে প্রমাণ হইতেছে যে, প্রাচীন বাবিরুষবাসিগণের সহিত ভারতবাসী দ্রবিড় বা ডমিল জাতির অতি নিকট-সম্পর্ক ছিল এবং উত্তরাপথের পশ্চিমপ্রান্তে বালুচিস্তানে ব্রহুই জাতির অস্তিত্ব ও ভাষা হইতে প্রমাণিত হয় যে, এক সময়ে সম্ভবতঃ আর্য্যজাতির আক্রমণের পূর্ব্বে আর্য্যাবর্ত্তে ও দাক্ষিণাত্যে দ্রবিড়জাতির বিস্তৃত অধিকার ছিল। অধ্যাপক হল অনুমান করেন যে, ভারতবর্ষই দ্রবিড়-
- ↑ বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ্ সুহৃদ্বর রায় বাহাদুর পণ্ডিত হীরালাল এক বৎসর পূর্ব্বে এই কীলকলিপির আবিষ্কার-বার্ত্তা আমাকে জানাইয়াছিলেন। পরে তিনি ইহার একটি প্রতিলিপি ও ছাঁচ (plaster cast) আমার নিকট পঠাইয়া দিয়া আমাকে উহা ব্যবহার করিতে অনুমতি দিয়াছেন। যে ইউরোপীয় পণ্ডিত এই কীলকলিপির পাঠোদ্ধার করিয়াছেন তাঁহার নাম L. W. King; Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal, Vol. X, 1914, pp. 461-63.
- ↑ Anderson’s Catalogue and Handbook of the Archaeological Collections in the Indian Museum, Calcutta. pt. II. p. 426; Indian Antiquary, Vol. II. p. 233.
- ↑ Maspero’s Dawn of Civilisation, p. 686.