কথা আছে কি না জানি না; কিন্তু তাহা সংস্কৃতমূলক নহে। তমলুক বাঙ্গালার প্রধান বন্দর। অশোকের সময় এমন কি বুদ্ধের সময়ও তমলুক বাঙ্গালার বন্দর ছিল। তমলুক হইতে জাহাজ সকল নানা দেশে যাইত।………। অনেক প্রাচীন গ্রন্থেও তমলুকের নাম পাওয়া যায়। তমলুকের সংস্কৃত নাম তাম্রলিপ্তি। তাম্রলিপ্তি শব্দের অর্থ কি, সংস্কৃত হইতে তাহা বুঝা যায় না। সংস্কৃতে তাম্রলিপ্তির মানে তামায় লেপা কিন্তু তমলুকের নিকট কোথাও তামার খনি নাই। তমলুক হইতেই যে তাম্র রপ্তানী হইত, তাহার কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না। বহু প্রাচীন সংস্কৃতে উহার নাম দামলিপ্তী অর্থাৎ উহা দামল জাতির একটি প্রধান নগর। বাঙ্গালায় যে এককালে দামল বা তামল জাতির প্রাধান্য ছিল, ইহা হইতে তাহাই কতক বুঝা যায়।”—মানসী, বৈশাখ ১৩২১, পৃঃ ৩৫৬-৫৮।
অধ্যাপক হল্ তাঁহার নব প্রকাশিত গ্রন্থে, প্রাচীন সুমেরীয় জাতি ও দক্ষিণাত্যবাসী দ্রবিড়জাতির পূর্ব্বপুরুষগণের ষে সম্বন্ধ নির্ণয় করিয়াছেন, নবাবিষ্কৃত বাবিলনীয় কীলকলিপি দ্বারা তাহার মূল্য কতদূর বর্দ্ধিত হইয়াছে, এই পরিচ্ছেদে তাহা দেখাইবার চেষ্টা করিয়াছি।
মহাভারতে বা রামায়ণে বাসুদেব, চন্দ্রসেন প্রভৃতি পৌণ্ড্রজাতীয় ও বঙ্গদেশীয় রাজগণের উল্লেখ আছে। অনাবশ্যক জ্ঞানে গ্রন্থমধ্যে তাহাদিগের উল্লেখ করি নাই। মহাভারত ও রামায়ণের ঐতিহাসিকতা এখনও তর্কের বিষয়, এতদ্ব্যতীত যে অংশে বাসুদেবপ্রমুখ রাজগণের নাম আছে, সেই অংশের বয়স কত তাহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। এই সকল কারণে এই গ্রন্থে মহাভারত বা রামায়ণের প্রমাণ গ্রহণ করা উচিত বোধ করি নাই।
বাঙ্গালার বর্ত্তমান অধিবাসিগণের সহিত দক্ষিণ-ভারতের দ্রাবিড় ভাষাভাষী অধিবাসিগণের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। ইহার প্রমাণ প্রাচীন দ্রাবিড়-সাহিত্যে পাওয়া যায়। “নাগপূজক কয়েকটি জাতি বাঙ্গালা হইতে এবং ভারতের উত্তরাঞ্চল হইতে তামিলকম্ দেশে যায়। ইহাদের মধ্যে মরণ, চের ও পাঙ্গালা-থিরইয়র উল্লেখ্য। চেরগণ উত্তর পশ্চিম পাঙ্গালা হইতে দক্ষিণ-ভারতে যায়। সেখানে গিয়া তাহারা চেররাজ্য-স্থাপন করে। পাঙ্গালা যে বাঙ্গালা, তাহা নিঃসন্দেহে বলিতে পারা যায়॥”……“একজন বাঙ্গালী বীর খৃষ্ট পূর্ব্ব সপ্তম শতকে আনাম-