পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।

শাতকর্ণিকে গ্রাহ্য না করিয়া পশ্চিমদেশে হয়, গজ, নর, রথ এই চারিটি বাহুযুক্ত সেনা প্রেরণ করিয়াছিলেন। তাহারা কন্থবেণা নদীপার হইয়া মুসিকনগর অবরোধ করিয়াছিল। তৃতীয় বর্ষে নৃত্যগীত, নাটকাভিনয় ও বাদ্য প্রভৃতি নানা উপায়ে তিনি নগরীর (কলিঙ্গ নগরের) মনোরঞ্জন করিয়াছিলেন। চতুর্থ বর্ষে তিনি ভোজকগণকে বশীভূত করিয়াছিলেন (এই স্থানে শিলালিপির অনেকগুলি কথা পড়িতে পারা যায় নাই)। পঞ্চমবর্ষে তিনি তনসুলিয়ের পথ হইতে নন্দরাজ কর্ত্তৃক ত্রিশতবর্ষ পূর্ব্বে উদ্ঘাটিত প্রণালী (কলিঙ্গ) নগর অবধি খনন করাইয়াছিলেন। সপ্তম বর্ষের বিবরণ অস্পষ্ট হইয়া গিয়াছে। অষ্টম বর্ষে তিনি বহু সেনা লইয়া গোরথগিরি নামক পর্ব্বত (জয় করিয়া) রাজগৃহে পীড়া উপস্থিত করিয়াছিলেন (জয় করিয়াছিলেন অথবা লুণ্ঠন করিয়াছিলেন) এই সকল কারণে রাজা (মগধরাজ) অবরুদ্ধ সেনা পরিত্যাগ করিয়া মথুরায় গমন করিয়াছিলেন। নবম বর্ষের বিবরণ অস্পষ্ট হইয়া গিয়াছে। দশম বর্ষে তিনি ভারতবর্ষ জয় করিতে যাত্রা করিয়াছিলেন। একাদশ বর্ষে তিনি তিক্ত কাষ্ঠনির্ম্মিত কেতুভদ্রের মূর্ত্তি রথযাত্রায় বাহির করিয়াছিলেন (শ্রীযুক্ত কাশীপ্রসাদ জায়সবালের মতানুসারে কেতুভদ্র ভারতযুদ্ধের একজন সেনাপতি এবং মহাভারতে ইঁহার উল্লেখ আছে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র মজুমদার এই মত গ্রহণ করেন নাই।—Indian Antiquary, Vol. XLVIII, 1919, pp. 189-191.)। এই কেতুভদ্র ত্রয়োদশশত বর্ষ (শিলালিপির সময় হইতে) জীবিত ছিলেন। তাঁহার দ্বাদশ রাজ্যাঙ্কে রাজা খারবেল উত্তরাপথের রাজাদিগের মনে ত্রাস জন্মাইয়া এবং মগধবাসীদিগের মনে বিপুল ভয় জন্মাইয়া বহসতিমিত (বৃহস্পতিমিত্র) নামক মগধরাজকে তাঁহার পাদবন্দনা করিতে বাধ্য করিয়াছিলেন। ত্রয়োদশ পংক্তি হইতে সপ্তদশ পংক্তি পর্য্যন্ত এই শিলালিপি ক্ষয়ের জন্য স্পষ্ট পড়া যায় না। শ্রীযুক্ত জায়সবাল বহু পরিশ্রম করিয়া এই অংশের নানাস্থানের পাঠোদ্ধার করিয়াছেন। চতুর্দ্দশ পংক্তিতে পাণ্ড্য রাজার নাম আছে। ষোড়শ পংক্তিতে মৌর্য্যকাল এবং ১৬৪ বৎসরের উল্লেখ আছে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ প্রমুখ অনেকে এই মৌর্য্যকাল অর্থাৎ মৌর্য্যাব্দের ১৬৪ বৎসরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান (Journal of the