পূর্ব্বে বঙ্গদেশে রাজশাহী জেলার অন্তর্গত নাটোর মহকুমায় বড়ইগ্রাম থানার অধীন ধানাইদহ গ্রামে জনৈক মুসলমান কৃষক একখানি ক্ষুদ্র তাম্রশাসন আবিষ্কার করিয়াছিল। তাহার নিকট হইতে নাটোরের ভূস্বামী মৌলবী ইর্শাদ-আলি খাঁ-চৌধুরী তাম্রশাসনখানি পাইয়াছিলেন। সুপ্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয় এই আবিষ্কারের সংবাদ পাইয়া উহা মৌলবী ইর্শাদ-আলির নিকট হইতে লইয়া গিয়াছিলেন। ১৯০৬-৭ খৃষ্টাব্দে কলিকাতায় যে শিল্প-প্রদর্শনী হইয়াছিল, তাহাতে বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদ্ বাঙ্গালা দেশের পুরাতত্ত্ব সম্বন্ধীয় কতকগুলি দ্রব্য প্রদর্শন করিয়াছিলেন। এই উপলক্ষে মৈত্রেয় মহাশয় নবাবিষ্কৃত তাম্রশাসনখানি পরিষদে প্রেরণ করিয়াছিলেন। তৎকালে পরিষদের অন্যতম সহকারী সম্পাদক পরমশ্রদ্ধাস্পদ ৺ব্যোমকেশ মুস্তফী মহাশয় আমাকে উহার পাঠোদ্ধারের ভার অপর্ণ করিয়াছিলেন। মৈত্রেয় মহাশয়ের অনুমতি অনুসারে উদ্ধৃতপাঠ পরিষদ্ পত্রিকায় ও এসিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়াছিল। এই তাম্রশাসনের অনেক অংশ পাঠ করা যায় না এবং ইহা ক্রমশঃ ক্ষয় হইয়া যাইতেছে। যখন ইহা পরিষদে প্রেরিত হইয়াছিল তখন ইহার প্রথম ছত্রের প্রথমাংশে মহারাজাধিরাজ প্রথম কুমারগুপ্তের নাম ছিল, কিন্তু এই অংশ ক্রমশঃ ক্ষয় হইয়া যাওয়ায় ইহার রক্ষার জন্য পরিষদের কর্ত্তৃপক্ষগণকে বিশেষ ব্যবস্থা করিতে হইয়াছিল। আট দশ বৎসর পূর্ব্বে মৈত্রের মহাশয় ইহা রাজশাহীতে ফিরাইয়া লইয়া গিয়াছেন। এই খোদিতলিপিতে মহারাজাধিরাজ প্রথম কুমারগুপ্তের নাম, শতত্রয়োদশ গৌপ্তাব্দ (৪৩২ খৃষ্টাব্দ), শিবশর্ম্মা ও নাগশর্ম্মা নামক ক্ষুদ্রক-গ্রামনিবাসী ব্রাহ্মণদ্বয় এবং মহাখুষাপার বিষয় নামক প্রদেশের নাম উল্লিখিত আছে। বরাহস্বামী নামক জনৈক বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ এই
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৭৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৫৯