পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৬৯

সপ্ততিহস্ত উচ্চ পাষাণ-নির্ম্মিত প্রাচীরদ্বারা সুদর্শনহ্রদ পুনরায় জলপূর্ণ করিয়াছিলেন। ১৩৮ গৌপ্তাব্দে চক্রপালিত এই হ্রদের তীরে একটি মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন[১]। গির্ণার (গিরিনগর) পর্ব্বতগাত্রে উৎকীর্ণ খোদিতলিপি হইতে অবগত হওয়া যায় যে, ৪৫৭ খৃষ্টাব্দেও সৌরাষ্ট্র স্কন্দগুপ্তের অধিকারভুক্ত ছিল। ভাগলপুর হইতে উত্তর-পশ্চিমে চত্বারিংশৎ ক্রোশ দূরে অবস্থিত কহাউঁ গ্রামে আবিষ্কৃত শিলাস্তম্ভলিপি হইতে অবগত হওয়া যায় যে, ১৪১ গৌপ্তাব্দে (৪৬০ খৃষ্টাব্দে) স্কন্দগুপ্তের রাজ্যকালে, মদ্রনামক এক ব্যক্তি ককুভ গ্রামে পঞ্চতীর্থঙ্করের প্রস্তরমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন[২]। ১৪৬ গৌপ্তাব্দে গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্ত্তী প্রদেশে মহারাজাধিরাজ স্কন্দগুপ্তের শাসনকর্ত্তা শর্ব্বনাগের অনুমত্যনুসারে দেববিষ্ণু নামক জনৈক ব্রাহ্মণ ইন্দ্রপুর নগরে ক্ষত্রিয়-জাতীয় বণিক্ অচলবর্ম্মা ও ভ্রূকুণ্ঠসিংহ কর্ত্তৃক নির্ম্মিত সূর্য্যদেবের মন্দিরে নিত্য একটি দীপ প্রজ্বালিত করিবার ব্যয় নির্ব্বাহার্থ কিঞ্চিৎ অর্থদান করিয়াছিলেন[৩]। অতএব ইহা অবশ্য স্বীকার্য্য যে, ৪৫৭ খৃষ্টাব্দেও অন্তর্ব্বেদী স্কন্দগুপ্তের অধিকারভুক্ত ছিল। এই সময় হইতে অন্তর্বিদ্রোহ বা বহিঃশত্রুর আক্রমণের ফলে গুপ্তবংশজাত সম্রাট্‌গণের ক্ষমতার হ্রাস হইতেছিল। প্রাদেশিক শাসনকর্ত্তাগণ সম্রাটের নামোল্লেখ না করিয়াই ভূমিদান করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। পরিব্রাজকবংশীয় হস্তী ও সংক্ষোভ, উচ্ছকল্পের জয়নাথ ও সর্ব্বনাথ এবং বলভীর ধরসেন প্রভৃতি সামন্তরাজগণের তাম্রশাসন ইহার প্রমাণ। ৪৬৫ খৃষ্টাব্দের পরে হূণগণ

  1. Fleet’s Corpus Inscriptionum Indicarum. Vol. III. p. 58.
  2. Ibid, p. 67.
  3. Ibid, p. 70.