পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৭৭

ধারী সুরশ্মিচন্দ্র নামক একজন সামন্তরাজা কালিন্দী ও নর্ম্মদার মধ্যবর্ত্তী ভূভাগ শাসন করিতেন[]। দুঃখের বিষয় এই যে দামোদরপুরে আবিষ্কৃত বুধগুপ্তের রাজ্যকালের তাম্রলিপিগুলিতে যে অংশে তারিখ ছিল তাহা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে[] সুতরাং গৌড়দেশে কতকাল পর্য্যন্ত বুধগুপ্তের অধিকার অক্ষুণ্ণ ছিল তাহা বলিতে পারা যায় না। সারনাথে আবিষ্কৃত শিলালিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে, ১৫৭ গৌপ্তাব্দে (৪৭৬ খৃঃ অব্দ) বারাণসীতে অর্থাৎ মধ্যদেশে বুধগুপ্তের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। দামোদরপুরের তাম্রলিপিতে যদিও তারিখ নাই তথাপি ইহা হইতে স্পষ্ট প্রমাণ হইতেছে যে পুণ্ড্রবর্দ্ধনভুক্তি কিছুকাল বুধগুপ্তের রাজ্যভুক্ত হইয়াছিল। অতএব ইহা অনুমান করা যাইতে পারে যে, যে সময়ে মধ্যদেশ বুধগুপ্তের রাজ্যভুক্ত ছিল সেই সময়ে অথবা তাহার অব্যবহিত পূর্ব্বে বা পরে গৌড়দেশও তাঁহার রাজ্যভুক্ত ছিল। অতএব ইহা অবশ্য স্বীকার্য্য যে এই সময়ে গুপ্ত-সাম্রাজ্যের কেন্দ্র মগধও বুধগুপ্তের অধিকারভুক্ত ছিল। ইরাণে আবিষ্কৃত শিলালিপি হইতে প্রমাণ হইতেছে যে, এই সময়ে অর্থাৎ সারনাথে আবিষ্কৃত শিলালিপির তারিখ হইতে আটবৎসর পরে, ১৬৫ গৌপ্তাব্দে (৪৮৪-৮৫ খৃঃ অব্দ) মালবদেশ ও যমুনার দক্ষিণ ভাগ, অর্থাৎ যে ভূখণ্ড মোগলযুগে মালবসুবা ও আগরাসুবা নামে পরিচিত ছিল[], তাহা বুধগুপ্তের অধিকারভুক্ত ছিল। মধ্যদেশের পশ্চিমভাগ বুধগুপ্তের অধিকারভুক্ত ছিল কি না তাহা প্রমাণাভাবে বলিতে পারা যায় না। পূর্ব্বে কথিত হইয়াছে যে, দামোদরপুরে আবিষ্কৃত বুধগুপ্তের রাজ্যকালের তাম্রলিপিগুলিতে তারিখ

  1. Fleet’s Gupta Inscriptions, p. 89.
  2. Epigraphia Indica, pp. 114-15.
  3. Ain-i-Akbari, Vol. II, pp. 182-209