নাই, সুতরাং বুধগুপ্তের অধিকার মধ্যদেশে, মগধে ও গৌড়দেশে কত দিন পর্য্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল তাহা বলিতে পারা যায় না। তাঁহার যে সমস্ত রজতমুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছে, সেগুলি ১৭৫ গৌপ্তাব্দে (৪৯৫-৯৬ খৃঃ অব্দ) মুদ্রিত হইয়াছিল[১]। এই সমস্ত মুদ্রার তারিখ হইতে প্রমাণ হইতেছে যে মালবদেশে বুধগুপ্তের অধিকার ১৬৫ গৌপ্তাব্দ হইতে ১৭৫ গৌপ্তাব্দ (৪৮৪-৪৯৫ খৃঃ অব্দ) পর্য্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল। কিরূপে কি ভাবে বুধগুপ্তের রাজ্যশেষ হইয়াছিল তাহা প্রমাণাভাবে বলিতে পারা যায় না। তাঁহার রাজ্যকালের দুইখানি শিলালিপি ও দুইখানি তাম্রলিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে। শিলালিপি দুইখানি বারাণসীর নিকট সারনাথে আবিষ্কৃত হইয়াছিল। প্রথম শিলালিপি অনুসারে অভয়মিত্র নামক এক বৌদ্ধ ভিক্ষু গৌপ্তাব্দের ১৫৭ বৎসরে একটি বুদ্ধমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করাইয়াছিলেন[২]। দ্বিতীয় শিলালিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে উক্ত বৌদ্ধ ভিক্ষু ১৫৭ গৌপ্তাব্দের বৈশাখ মাসের সপ্তমীতে ছত্র এবং পদ্মাসনের সহিত আর একটি বুদ্ধমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করাইয়াছিলেন[৩]। তাম্রলিপি দুইখানি দিনাজপুর জেলায় দামোদরপুর গ্রামে আবিষ্কৃত হইয়াছিল। প্রথম তাম্রলিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে, বুধগুপ্তের রাজ্যকালে উপরিক, মহারাজ ব্রহ্মদত্ত পুণ্ড্রবর্দ্ধনভুক্তির শাসনকর্ত্তা ছিলেন। এই সময়ে নাভক নামক একজন গ্রামীক, কতকগুলি ব্রাহ্মণ বাস করাইবার জন্য, এককুল্যবাপ পরিমাণ ভূমি ক্রয় করিতে ইচ্ছুক হওয়ায়, তাহার আবেদনে পলাশবৃন্দক গ্রাম হইতে উক্ত ভূমি বিক্রয়ের আদেশ প্রদত্ত হইয়াছিল।
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৯৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।