পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৭৯

উক্ত ভূমি সম্ভবতঃ চণ্ডগ্রামে অবস্থিত ছিল। নাভকের নিকট দুই দীনার মূল্য পাইয়া উক্ত পরিমাণ ভূমি যাহা বায়িগ্রামের উত্তরপার্শ্বে অবস্থিত ছিল, তাহা নাভককে প্রদত্ত হইয়াছিল। অধ্যাপক শ্রীযুক্ত রাধাগোবিন্দ বসাক অনুমান করেন যে, এই তাম্রলিপি ১৬৩ গৌপ্তাব্দে (৪৮১-৮২ খৃঃ অব্দ) উৎকীর্ণ হইয়াছিল[১]। দামোদরপুরে আবিষ্কৃত বুধগুপ্তের রাজ্যকালের দ্বিতীয় তাম্রলিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে, বুধগুপ্তের রাজ্যকালে উপরিক-মহারাজ জয়দত্ত পুণ্ড্রবর্দ্ধনভুক্তির শাসনকর্ত্তা ছিলেন এবং তাঁহার অধীনে আয়ুক্তক সাণ্ডক বা গাণ্ডক কোটিবর্ষ বিষয়ের শাসনকর্ত্তা ছিলেন। এই সময়ে নগরশ্রেষ্ঠী রিভুপাল কোকামুখস্বামী এবং শ্বেতবরাহস্বামী নামক দেবদ্বয়ের জন্য দুইটি মন্দির ও দুইটি কোষ্ঠিকা নির্ম্মাণ করিবার জন্য হিমবচ্ছিখর নামক স্থানে কিঞ্চিৎ বাস্তুভূমি ক্রয় করিবার আবেদন করিয়াছিলেন। এই আবেদনানুসারে পুস্তপাল (শেরেস্তাদার বা মহাফেজ) বিষ্ণুদত্ত, বিজয়নন্দী এবং স্থাণুনন্দী, এই রিভুপাল পূর্ব্বে হিমবচ্ছিখর নামক স্থানে কোকামুখস্বামী ও শ্বেতবরাহস্বামী নামক দেবদ্বয়কে একাদশ কুল্যবাপ পরিমিত ভূমি পূর্ব্বে দান করিয়াছেন স্থির করায়, প্রতি কুল্যবাপের তিন দীনার মুল্য অনুসারে কিঞ্চিৎ ভূমি বিক্রয় করিবার আদেশ প্রদত্ত হইয়াছিল। এই আদেশ কোন অজ্ঞাত বৎসরের ফাল্গুন মাসের পঞ্চদশ দিবসে প্রদত্ত হইয়াছিল[২]। অদ্যাবধি বুধগুপ্তের কোনও সুবর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হয় নাই। প্রাচীন গুপ্ত-রাজবংশের যে আকারের এবং যে রূপের সুবর্ণমুদ্রা উত্তরাপথের সর্ব্বত্র আবিষ্কৃত হইয়াছে, বুধগুপ্তের সে জাতীয় মুদ্রা আবিষ্কৃত

  1. Epigraphia Indica, Vol XV. pp. 135-36.
  2. Ibid, pp. 138-39.