পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম পরিচ্ছেদ . . ১৩৩ শেখ নুরূ কুতব-উল-আলম ও রাজা গণেশ সম্বন্ধে গোলাম হোসেন য়ে সকল কথা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, তাহা সত্য না হইলেও না হইতে পারে । জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহিম শাহ শাকী কোনও সময়ে গৌড় বা লক্ষ্মণাবতী আক্রমণ করেন নাই, কারণ তারিখ-ই-ফেরেশতা বা মন্তখবত-উং-তওয়ারিখে ইব্রাহিম শাহের গোঁড়াভিযানের উল্লেখ নাই । গোলাম হোসেন বলিয়াছেন যে, তখন ইব্রাহিম শাহের রাজ্য বিহারের সীমা পর্য্যন্ত বিস্তৃত ছিলণ্ড, ইহা সত্য, কারণ ইব্রাহিম শাহের অধিকার প্রাচীন দিল্লীর নগরপ্রাচীর হইতে মগধের কিয়দংশ পর্য্যন্ত বিস্তৃত ছিল । নূর কুতবা-উল-আলম গৌড়ীয় মুসলমানগণের প্রতিনিধি-স্বরূপ, হয়ত ইব্রাহিম শাহকে বিধৰ্ম্মী রাজার বিনাশসাধনের জন্য র্তাহাকে গৌড়রাজ্য আক্রমণ করিতে অনুরোধ করিয়াছিলেন ; কিন্তু ইব্রাহিম শাহ সে অনুরোধ রক্ষা করিতে পারিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না। তখন তিনি, ফিরোজ শাহের বংশধর, মহমুদ শাহ তোগলকের নিকট হইতে তোগলক বংশের অধিকারের ধ্বংসাবশেষ গ্রাস করিতে সমুৎসুখ । বস্তুতঃ, ইব্রাহিম শাহ শাকী ব্যতীত উত্তরাপথে বিপন্ন মুসলমান-ধৰ্ম্মযাজকগণের আশ্রয়স্থল হইতে পারেন এইরূপ পরাক্রান্ত মুসলমান নরপতি কেহ ছিলেন না। ফিরোজ শাহের মৃত্যুর পরে তাহার পৌত্র দ্বিতীয় গিয়াসউদ্দীন তোগলক্‌ শাহ ৭১০ হিজরায় (১৩৮৮ খৃষ্টাব্দে ) দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন ৩২, কিন্তু তাহার রাজ্যের প্রথম বর্ষ পূর্ণ হইবার পূৰ্ব্বেই তিনি নিহত হইয়াছিলেন এবং ফিরোজ শাহের অপর পৌত্র আবুবকর সিংহাসন লাভ করিয়াছিলেন ৩৩ । ৭৯২ হিজরায় (১৩৮৯ খৃষ্টাব্দে ) ফিরোজ শাহের প্রধান মন্ত্রী খান-ই-জহানকে পরাজিত করিয়া ফিরোজ শাহের তৃতীয় পুত্র মহম্মদ পিতৃসিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন । ৭৯৫ বা ৭৯৬ হিজরায় (১৩৯২ খৃষ্টাব্দে ) তাহার মৃত্যু হইলে তৎপুত্র শাহজাদা হুমায়ূন সিকন্দর শাহ উপাধি গ্রহণ করিয়া পঞ্চচত্ত্বারিংশ দিবসমাত্র দিল্লীর (৩১) রিয়াজ-উস-সালাতন, ইংরাজি অনুবাদ, পৃঃ ১১৪। (*). Catalogue of Coins in the Indian Museum, Calcutta, Vol. I, pt. Я, р. 2. (*) Ibid. (৩৪) মন্ত খৰ-উং-তওয়ারিখ, ইংরাজি অনুবাদ, প্রথম ভাগ, পৃ:৩৪৩।