পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম পরিচ্ছেদ ১৮১ গণেশের পৌত্র শমসূ-উদ্দীন আহমদ শাহ শাদী খ ও নাসির খাঁ নামক ক্রীতদাসদ্বয় কর্তৃক নিহত হইলে নাসির খাঁ কিয়ংকাল গৌড়-সিংহাসন অধিকার করিয়াছিল। মুসলমান সমাজে প্রচলিত অবরোধ-প্রথার অনুরোধে, জগতের সর্বত্র মুসলমান নরপতিগণ অবরোধ-রক্ষার জন্য ক্লাব ক্রীতদাস নিয়োগ করিতেন । ইহারা সৰ্ব্বত্র, সকল সময়ে বিশ্বাসভাজন হইয়া উঠিত। অধিকতর বিশ্বাসভাজন হইয়া উঠিলে কোন কোন ক্রীতদাস বিশ্বাসহন্ত হইয়া প্রভুহত্যা করিত এবং মুহূর্তের জন্য শূন্য সিংহাসনের অধিকারী হইয়া রাজ্যশাসনে প্রবৃত্ত হইত। পর মুহূর্ডেই তাহার ছিন্নশীর্ষ শূন্যসিংহাসনের পাদমূলে ঘুষ্ঠিত হইত। আহমদ শাহকে হত্যা করিয়া ক্রীতদাস নাসির খ যখন তাহার কলুষিত পাদস্পর্শে পবিত্র গৌড়-সিংহাসন কলঙ্কিত করিয়াছিল, ' তখন গৌড়রাষ্ট্রের আভিজাত্যাভিমানী ওমরাহ্যগণ ও আহমদ শাহের প্রভূভক্ত সেনানিগণ, সেই দিবসই তাহার রক্তে গৌড়-সিংহাসনের কলঙ্ককালিমা ধোঁত করিয়াছিলেন। কিন্তু আহমদ শাহের হত্যার অৰ্দ্ধশতাব্দী পরে ইলিয়াস শাহের বংশের শেষ সুলতান জলাল-উদ্দীন ফতে শাহ অপর একজন ক্রীতদাস কর্তৃক নিহত হইলে গৌড়রাজ্যে কেহ তাহার বিরুদ্ধে হস্তোত্তোলন করিতে ভরসা করে নাই । ইহার একমাত্র কারণ এই হইতে পারে যে, হাবশী ক্রীতদাসগণ পরাক্রমশালী হইয়া উঠিলে হিন্দু ও মুসলমান ওমরাহ এবং সেনাপতিগণ ক্ষমতাহীন হইয়া পড়িয়াছিলেন এবং রাজানুগ্রহাভাবে তাহারা, ক্রমশঃ রাজপ্রাসাদ অথবা রাজধানী হইতে দূরে সরিয়া যাইতে বাধ্য হইয়াছিলেন । • জুলাল-উদ্দীন ফতে শাহের হত্যার দুই অথবা ছয় মাস কাল পর্য্যন্ত প্রত্নহন্ত বারবগ গৌড়ের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিল। ফতে শাহের পত্নী ও শিশুপুত্র প্রাসাদ হইতে তাড়িত হইয়া গোঁড়নগরে সামান্ত ব্যক্তির ন্যায় বাস করিতেছিলেন। সিংহাসন অধিকৃত করিয়া ক্রীতদাস বার্বগ সুলতান শাহজাদা উপাধি গ্রহণ করিয়াছিল এবং অন্যান্য খোজা ও নিয়শ্রেণীর ব্যক্তিগণকে অর্থপ্রদানে বশীভূত করিয়াছিল। ফতে শাহের মৃত্যুকালে গৌড়রাজ্যের প্রধান অমাত্য মালিক আদিল হাবশী রাজকাৰ্য্যে সীমান্তে গমন করিয়াছিলেন । বাৰ্ববঙ্গ তাহাকে বশীভূত না করিতে পারিয়া হত্যা করিতে চেষ্টা করিয়াছিল। মালিক আদিল বাবগকে সিংহাসনচ্যুত