পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ ۹وا দেব-মন্দির ছিল, সেই দেব-মন্দির মধ্যে জফর খী সমাহিত আছেন" । সমাধির নিকটে বহু হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবমন্দিরের ধ্বংসাবশেষ লইয়া নিৰ্ম্মিত একটি বৃহৎ মসজিদ আছে। এই মসজিদের একটি খিলান মসজিদ অপেক্ষাও প্রাচীন। এই খিলানটি সপ্তগ্রাম-বিজেতা জফর খী কর্তৃক নিৰ্ম্মিত একটি মসজিদের মিহরাব । অনুমান হয় যে, সপ্তগ্রাম বিজয় করিয়া জফর খা একটি মসজিদ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন ৩৮ । কালে সে মসজিদ বিনষ্ট হইয়াছিল, কিন্তু তাহার একটি খিলান বা মিহরাব ধ্বংস হয় নাই। পরবর্তীকালে যখন বর্তমান মসজিদটি নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, তখন মসজিদ-নিৰ্ম্মাত প্রাচীন মসজিদের এই মিহরাবটি নূতন মসজিদের মিহরাবে পরিণত করিয়াছিলেন । এই মিহরাবের গঠনপ্রণালী বৰ্ত্তমান মসজিদের অন্যান্য মিহরাবের ন্যায় নহে এবং ইহাই বাঙ্গালা বিহার উড়িষ্ঠায় মুসলমান রাজত্বকালের সর্বপ্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। এই মিহরাব বা খিলানের গাত্রে একটি প্রাচীন আরবী শিলালিপি আছে । তাহ হইতে অবগত হওয়া যায় যে, ৬৯৮ হিজরায় ( ১২৯৮ খৃষ্টাব্দে ) একটি মসজিদ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল এবং মসজিদ-নিৰ্ম্মাতা জফর খাঁ হিন্দুদিগকে পরাজিত করিয়া মুসলমানদিগকে ধনরত্ন প্রদান করিয়াছিলেন।৩৯ ৷ এই শিলালিপি এখন অত্যন্ত অস্পষ্ট হইয়া পড়িয়াছে এবং ইহার অনেকস্থানের পাঠোদ্ধার অসম্ভব । ইহাতে রাজার নাম ছিল, কিন্তু সেই স্থান ভাঙ্গিয়া গিয়াছে সুতরাং সপ্তগ্রাম রুকনউদ্দীন কৈকাউস্ শাহের রাজ্যকালে বিজিত হইয়াছিল, কি শমস্-উদ্দীন ফিরোজ শাহের রাজ্যকালে বিজিত হইয়াছিল, তাহ স্থির বলা যায় না। ১২৯৭ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৩০২ খৃষ্টাব্দের মধ্যে কৈকাউস্ শাহের কনিষ্ঠ ভ্রাতা শমসূ-উদ্দীন ফিরোজ শাহ লক্ষ্মণাবতীর অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, কারণ ৭০২ হিজরায় তাহার নামে নূতন মুদ্র মুদ্রিত হইয়াছিল’ । শমস্-উদ্দীন ফিরোজের পাচ পুত্রের নাম অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হইয়াছে। তাহাদিগের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শাহাবৃ-উদ্দীন বগুড়া শাহ তাহার পিতার রাজ্যের শেষভাগে বিদ্রোহী হইয়াছিলেন এবং ৭১৮ হিজরায় (১৩১৮ খৃষ্টাব্দে ) লক্ষ্মণাবতীতে নিজনামে (**) Ibid, pp. 245-46. (*) Ibid, p. 246. (**) Journal of the Asiatic Society of Bengal, Vol. XXXIX, 1870, pt. I, pp. 285-86. - (80) Initial Coinage of Bengal, p. 49.