শব্দ “কজলবাস’ ৰূপে লিখিত হওয়ায় টাকায় ইহার অৰ্থ হইয়াছে “একপ্ৰকার পাহারাদার জাতি ; তথবা পরদাও হয় ।” উজলের টীকা নাই । পশ্চিমাঞ্চলে থাকিতে কজলবাশ-উপাধিক জনৈক ভদ্ৰলোকের সহিত অামার বন্ধুত্ব হইয়াছিল । তিনি শিয়া সম্প্ৰদায়ভুক্ত । তাহার নাম ঐ প্রদেশের সিভিল লিস্টুতে ( Civil list ) পাওয়া যায় । তিনি অবশ্য উজ বক্ ছিলেন না । যাহা হউক , অরবী ১১ ৬০ - র অনুরুপ উচ্চারণদ্যোতক বৰ্ণের ব্যবহার থাকিলে, বা “বাস” স্থলে মূল উচ্চারণজ্ঞাপক বাশ” বা “বাষ” লিখিত থাকিলে এরুপ অশুদ্ধ পাঠ এবং অনুমানের উপর নিৰ্ভৰ করিয়া টীকা লিখিবার প্রয়োজন ইত না । । পুরাতন বাঙ্গালায় এত অধিক অশুদ্ধ পাঠ প্ৰবেশ লাভ করিয়াছে যে তাহা হইতে অভিধানের জন্য শব্দসঙ্কলন কোন মতেই নিরাপদ নহে । কিন্তু সেই সকল পুথি এবং তাহাদের মুদ্ৰাকরপ্ৰমাদ-পূৰ্ণ অাধুনিক সংস্করণগুলি ভিন্ন যখন গত্যন্তর নাই, তখন যে সকল শব্দের শুদ্ধি সম্বন্ধে সন্দেরে কারণ থাকিবে, সেগুলি অনুমানিক আগের উপর নিৰ্ভর করিয়া অভিধানভুক্ত করা বিধেয় নহে । বৰ্ত্তমান অভিধানে এই নীতি যথাসাধ্য অনুসরণ করিবার চেষ্টা ইয়াছে । সকল ক্ষেত্রে সে চেষ্টা ফলবতী হয় নাই । প্ৰকৃত উচ্চারণ-প্ৰকাশের উপায় ও চেষ্টা না থাকায় এইরুপ দুষ্টাস্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইয়াছে । ইংরেজী উচ্চারণ জানিবার জন্য কোন ইংরেজের নিকট যাইবার প্রয়োজন হয় না । ইংরেজী অভিধানই এ সম্বন্ধে অভ্ৰান্ত পথ-প্ৰদৰ্শক । কি আমাদের ভুল পদে পদে । যাহা তউক , এসকল অ্যর মুখে তামাদের ভাষা এবং হামাদের মুখে অন্যের ভাষার শব্দ উচ্চারণের কথা । অামাদেরই মুখে আমাদেরই মাতু ভাষার শব্দ উচ্চারণ-বিকারে দুবোধ হইতে পারে । অস্থির অঙ্গার'—পূৰ্ব্ববঙ্গের ধারায় পশ্চিমবঙ্গে যদি অকারাদিক উচ্চারণ করা সায়, তাহা৷ হইলে শ্ৰোত “অস্থির ” অর্থে “চঞ্চল” বুলিতে পারেন । তাবার পশ্চিমবঙ্গের ধারানুসারে “অ’কে “ও’র মত করিয়৷ যদি “ওস্থির ওসঙ্গার” বলা হয়, তাহা হইলে পূৰ্ব্ববঙ্গে “ওস্থিৰ’ ও পশ্চিম বঙ্গে “ওঙ্গার শুনিয়া কেত হাস্থ্য সরণ করিতে পারিসেন না । কলিকাতার বাঙ্গালী বলিবেন “ওস্থির অঙ্গার ’ তবেই “হাড়ের কয়লা” বুঝিবেন । বাঙ্গালা এখন উস্তরোত্তর বঙ্গের বাহিরেও বিস্তার লাভ করিতেছে এবং ইতার প্রতি সমগ্ৰ সভ্য-জগতের দৃষ্টি পড়িতেছে । এই সকল কারণে “বাঙ্গালা ভাষার অভিধানে শব্দোচ্চারণের প্রয়োজনীয়তা ? অনুভব করি এবং রাজধানী কলিকাতার উচ্চারণকেই আদৰ্শ মনে করি । শব্দের ব্যবহিত পরেই তজজ্য ( ) এইরুপ বন্ধনীর মধ্যে উচ্চারণ প্ৰদত্ত হইয়াছে । রোেপ বৰ্ণযোজনা করিলে মূল উচ্চারণের নিকটতম অনুকরণ হইতে পারে উচ্চাবণ-পরিভাষা সেইভাবে বৰ্ণাবিন্যাসের চেষ্টা করা হইয়াছে । । বৰ্ণে কোন স্বরচিহয় যুক্ত না থাকিলে তাহা কারাস্তব উচ্চারিত হইবে । “অ’”বৰ্ণের যে ৪ প্ৰকার ও “তা”বৰ্ণের ৩ প্ৰকার এবং অন্যান্য সরবর্ণের যে সকল উচ্চারণ বাঙ্গালায় প্ৰচলিত অাছে, তাহা অভিধানের যথাস্থানে প্ৰদৰ্শিত হইয়াছে । ব্যঞ্জনবৰ্ণ গুলির কারান্ত উচ্চারণ বাঙ্গালার বিশেষত্ব । উহাদের দ্ৰুত বা লঘু অাকারান্ত ভূমিকা । মশলা প্ৰেম শব্দে ( স্থলে বৰ্ণে নিয়ে কবি চি দিলেও চলে, যথা—প্ৰে ). মোণির যে, মোতিম হারের মো ও ম, রমজানের মূ, ।। বুঝাইতে বৰ্ণেৰ মাথায় উলটা রেফ চি ব্যবহার করিলে চলে যথা৷ শ লা), মড়ার ম. মাৱ মে, উচ্চারণে এক নহে “আমি আম খাব লাতাও খাব । ময়দাতে, যেমন হয়, গাঢ়ায় তেমন অাটা হয় ন " উচ্চারণে —“তুমি অা থাবো তাও থাবো ময়দাতে জামান হয়, অ্যাটায় তামোন স্থাটা হয় ন লিখি-“বাপার ব্যপী, কলিকাতা অঞ্চলে বলি—“ব্যাথার বেণি” । লিখি—“ননী খুব ননী খেতে ভালবাসে’, বলি—নোনি খুব নোনি খেতে ভালোবাশে
পাতা:বাঙ্গালা ভাষার অভিধান (প্রথম সংস্করণ).djvu/১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।