পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩১
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র

প্রতিদিন প্রত্যুষে উঠিয়া তিনি “জয়হিন্দ” রবে তাহাদিগকে অভিবাদন করিতেন। তাহারাও হস্ত উত্তোলন করিয়া নেতাজীকে প্রত্যভিবাদন করিত।

 নেতাজীর অনুপস্থিত কালে একদিন বানর-দম্পতীর সহিত কুকুরের বিবাদ হইল এবং কুকুরটি পুরুষ বানরটীকে দংশন করিয়া ক্ষতবিক্ষত করিল। নেতাজী গৃহে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়া বানরের অবস্থা দেখিয়া অশ্রু সংবরণ করিতে পারিলেন না। সন্তান পীড়িত হইলে জননী যেমন প্রাণপাত করিয়া তাহার সেবা শুশ্রুষা করেন, এই শাখা-মৃগের শারীরিক ক্ষত উপশমের জন্য নেতাজীও সেইরূপ পরিশ্রম করিলেন। কিন্তু এত চেষ্টা করিয়াও তাহার প্রাণরক্ষা হইল না। ইহাতে সুভাষচন্দ্র এইরূপ শোকাভিভূত হইলেন এবং কুকুরের উপর এইরূপ ক্রোধান্বিত হইলেন যে তিনি অবিলম্বে তাহাকে হত্যা করিবার আদেশ দিলেন।

 সুভাষচন্দ্র সূর্য্যোদয়ের বহুপূর্ব্বে শয্যাত্যাগ করিতেন, এবং ভগবতোপাসনা ও ব্যায়াম শেষ করিয়া দৈনন্দিন কার্য্যে প্রবৃত্ত হইতেন। ব্রহ্মদেশের অধিবাসীগণের ধর্ম্মের প্রতি তাঁহার অসাধারণ ভক্তি ছিল। সামরিক পরিচ্ছদ অথবা পাদুকা পরিধান করিয়া তিনি কদাচ তাহাদের ধর্ম্মমন্দিরে (Pagoda) পদার্পণ করিতেন না। উক্ত ধর্ম্মের প্রতি তাঁহার এরূপ অনুরাগ ছিলযে তিনি ভূলুণ্ঠিত হইয়া সেই দেবতাগণের উপাসনা করিতেন। পারাবতগুলিকেও প্রতিদিন তিনি স্বহস্তে আহার করাইতেন।