পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র

 সাহিত্যবিজ্ঞান প্রভৃতি কলা বিদ্যায় এবং ধর্ম্মজগতে বাঙ্গালী জাতি যে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়া আসিতেছেন, তাহা পাশ্চাত্য জগতের কাহারও অবিদিত নাই। কিন্তু সামরিক বিভাগে বাঙ্গালীর স্থান কোথায় তাহাই এখন বিচার করিতে হইবে।

 ইংরাজ ঐতিহাসিকগণ চিরদিনই বাঙ্গালীকে ভীরু ও কাপুরুষ নামে অভিহিত করিয়া আসিতেছেন। দৃষ্টান্ত স্বরূপ লক্ষ্মণ সেনের পলায়ন-কাহিনী তাঁহারা ইতিহাসের পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন। মনস্বী বঙ্কিমচন্দ্র “বাঙ্গলার কলঙ্কে” তাঁহার অখণ্ডনীয় যুক্তিদ্বারা এই কলঙ্ক দূর করিয়া গিয়াছেন।

 বাঙ্গালী কি সতাই ভীরু ও কাপুরুষ? বর্ত্তমানযুগের লব্ধপ্রতিষ্ঠ নাট্যকার ও স্বদেশপ্রেমিক দ্বিজেন্দ্রনাথ গাহিয়াছেন—

একদা যাহার বিজয় সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়,
একদা যাহার অর্ণবপোত ভ্রমিল ভারত-সাগরময়,
সন্তান যার তিব্বত চীন জাপানে গড়িল উপনিবেশ,
তুই কি না মাগো তাদের জননী, তুই কি না মাগো তাদের দেশ?

 বাঙ্গালীবীর বিজয় সিংহ সাতশত অনুচর লইয়া জাহাজে চড়িয়া লঙ্কাদ্বীপে উপস্থিত হন, এবং এই মুষ্টিমেয় যোদ্ধার সাহায্যে লঙ্কা জয় করিয়া তথায় বাঙ্গালী জাতির জয়পতাকা উড্ডীন করেন। একথা ইতিহাস পাঠক সকলেই অবগত আছেন। বিজয়সিংহের নাম অনুসারে লঙ্কাদ্বীপের নাম সিংহল হইয়াছে।