পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাঙ্গ্‌লার বেগম

 বাঙ্গালার হতভাগ্য শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার জীবনের কাহিনী ইতিহাস-পাঠকের নিকট অপরিজ্ঞাত নহে; কিন্তু তাঁহার প্রধানা বেগম লুৎফুন্নিসার নামমাত্র অনেকের নিকট পরিচিত থাকিলেও, তাঁহার জীবনের ঘটনাবলী সম্বন্ধে অল্পই জানিতে পারা যায়।

 লুৎফুন্নিসা কোন সম্ভ্রান্ত বংশে জন্মগ্রহণ করেন নাই। তিনি অতি অল্প বয়সেই ক্রীতদাসীরূপে[১] নবাব আলিবর্দ্দীর বেগমমহলে প্রবিষ্ট হ’ন। নবাবের প্রিয় দৌহিত্র সিরাজ অতি অল্প কালের মধ্যেই তাঁহার অনুপম রূপ-লাবণ্য ও নব-যৌবনের সৌন্দর্য্যরাশি দেখিয়া বিমোহিত হইয়াছিলেন। পতঙ্গের অনল-প্রীতির ন্যায় সিরাজেরও রূপোন্মাদ ঘটিয়াছিল। সিরাজ তাঁহাকে কামনার বস্তু মনে করিয়া উপভোগের জন্য লালায়িত হইয়াছিলেন। লুৎফুন্নিসা কিন্তু বাঙ্গালার ভাবী নবাবকে বহুবার প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলেন এবং বিবাহ ব্যতীত কিছুতেই তাঁহার অঙ্কশায়িনী হইতে স্বীকৃত হ’ন নাই। বিবাহের পথে প্রধান কণ্টক আভিজাত্য জানিয়াও ক্রীতদাসী কিছুতেই ভাবী নবাবের লালসার সামগ্রী হইতে চাহিলেন না। কালক্রমে প্রথম প্রেমের উন্মত্ততা কিছু


  1. মূল মুতাক্ষরীণে (১৮২ পৃঃ) লুৎফুন্নিসাকে সিরাজের “জারিয়া” বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে। “জারিয়া” শব্দের অর্থ—ক্রীতদাসী; কিন্তু নিতান্ত হীনভাবের দাসী নহে।