পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আলিবর্দ্দী-বেগম

 নবাব আলিবর্দ্দী খাঁর রাজত্বের বহু ঐতিহাসিক ঘটনা তাঁহার বেগমের সহিত ঘনিষ্টভাবে বিজড়িত। বেগম সাহেবা ছায়ার ন্যায় তাঁহার স্বামীর অনুবর্ত্তিনী ছিলেন, নিম্নলিখিত ঘটনা দুইটী হইতে তাহা জানিতে পারা যায়।

 মীরহবিবের নিকট রত্নপ্রসূ বঙ্গভূমির বিপুল ঐশ্বর্য্যের কথা শ্রবণ করিয়া, রঘুজী ভোঁসলে ভাস্কর পণ্ডিতকে বঙ্গদেশে প্রেরণ করেন। এই মহারাষ্ট্র-অভিযানের কথা নবাব আলিবর্দ্দীর কর্ণগােচর হইলে, তিনি বর্দ্ধমানের নিকটে তাহাদের সম্মুখীন হ’ন। এই সময় তাঁহার বেগমও তাঁহার সহিত যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন। মহারাষ্ট্রীয় গণ লুণ্ঠনে ও নানারূপ নির্য্যাতনে লােকদিগকে বিপর্য্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিল এবং এই কার্য্যে তাহারা এতদূর অগ্রসর হইয়াছিল যে, ‘লণ্ডা’ নামক যে হস্তীর উপর নবাব-বেগম আরূঢ়া ছিলেন, সেই হস্তী সমেত তাঁহাকে বন্দিনী করিয়া নিজেদের শিবিরে লইয়া যায়। নবাবের জনৈক সেনানী ওমার খাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র মুসাহেব খাঁ, এই অবমাননায় মর্ম্মাহত হইয়া, বীরবিক্রমে আত্মজীবন-বিনিময়ে বহু কষ্টে বেগমের উদ্ধার সাধন করিয়া, তাঁহার মান মর্য্যাদা রক্ষা করেন![১]

 বালেশ্বরের যুদ্ধক্ষেত্রেও আলিবর্দ্দী খাঁর পার্শ্বে আমরা বেগম সাহেবাকে দেখিতে পাই। রণকোলাহলের মধ্যে, অগণিত দ্বিষতের প্রাণহীন দেহ

২৯


  1. “The Mahrattas continued their depredations, so much so that they laid their hands on the very elephant on which the Begum was riding, and were leading it away to their camp, when Musaheb Khan, eldest son of Omer Khan rescued the Begum and the elephant.” alsn's Murshidabad —P. 146.