পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মণিবেগম

সংখ্যা অনুসারে তোপধ্বনি করিবার আদেশ দিয়াছিলেন। জাফরগঞ্জ সমাধিভবনে নবাব-নাজিমদিগের সমাধির উত্তরে একটী প্রাচীরবেষ্টিত স্থানে মণিবেগম সমাহিত হ’ন।

 মণিবেগমের মৃত্যুর পর তাঁহার সম্পত্তি লইয়া অনেক গোলযোগ উপস্থিত হইয়াছিল। আমরা কয়েকখানি পত্রে ইহার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাইয়াছি। বাহুল্যভয়ে এস্থলে আর সেগুলি উদ্ধৃত হইল না।

 মণিবেগমের মৃত্যুর পর তাঁহার অন্তঃপুর হইতে প্রাপ্ত ধনরাজী হইতে ১৬০৫৩৲ টাকা কর্ত্তন করিয়া অবশিষ্ট ১৪৮৫৪৫৪৸৹ টাকা তাঁহার নিজস্ব বলিয়া স্থিরীকৃত হয়। এই টাকা হইতে ৫০,০০০৲ টাকা মূল্যের বন্ধকী বহুমূল্য প্রস্তররাজির উদ্ধারকল্পে ও অন্যান্য বাবদে টাকা বাদ দিয়া ৫৮২৭৬০৸৴৫ টাকা নবাব বাহাদুরকে প্রদান করা হয়। অধিকন্তু মণিমুক্তা, স্বর্ণ-রৌপ্যের বাসন প্রভৃতি ও অন্যান্য সম্পত্তিও নবাবকে দেওয়া হইয়াছিল—ইহার মূল্যও প্রায় ৮৫০০০০৲ টাকা। এইরূপে মণিবেগমের মৃত্যুর পর, নবাব বাহাদুর জমি-জমা ও প্রাসাদ সংলগ্ন চক-বাজার

    সাহেবের ‘Murshidabad’ পুস্তকের ১৮৯ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত আছে, মণিবেগম আলিজার নিজামতি প্রাপ্তির সময় (১৮১০ খঃ অব্দ জুন মাস) তাঁহাকে মসনদে বসান হইবে কি না, এই বিষয় লইয়া অনেক বাদানুবাদ উত্থাপিত করিয়াছিলেন। তাহা হইলে দেখা যাইতেছে যে, ১৮১০ খঃ অব্দেও তিনি জীবিত ছিলেন। আবার আমরা Musnad of Murshidabad (পৃঃ ১৩৩) পুস্তক পঠে অবগত হই, ১৮১২ খৃঃ অব্দের এপ্রিল মাসে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন, কিন্তু পুনরায় এই পুস্তকেরই পরিশিষ্টে (পৃঃ ৩২০) উক্ত হইয়াছে যে, ১৮১৩ খৃঃ অব্দের ১০ই জানুয়ারী তারিখে বেগম সাহেবার মৃত্যু হয়। সম্ভবতঃ মুদ্রাকর প্রমাদবশতঃ নিখিলবাবুর পুস্তকে ১৮১৩ স্থলে ১৮০২ লিখিত হইয়াছে।

৪৩