পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধামুনের মেয়ে eశి বলেছিল জানো ? বলেছিল, এ-কাজ নতুনও নয়, আর তার মনিবই কেবল একলা কবেন না--এমন অনেক ব্রাহ্মণই দূরাঞ্চলে বংখরার কারবারে অপরের সাহায্য নিয়ে থাকেন। - অরুণ ক্রোধে গর্জন করিয়া বলিল, খুব সম্ভব সত্যি , নইলে ব্ৰাহ্মণ-কুলে গোলকের মত কসাই বা জন্মায় কি করে? অথচ এরাই সমস্ত হিন্দু-সমাজের মাথায় বসে আছে । তার পরে ? তার পরে ঠাকুরম আমার বাবাকে নিয়ে কাশী চলে গেলেন। সেই অবধি তিনি সন্ন্যাসিনী--সেই অবধি কোথাও মুখ দেখান না। সন্ধ্যা পুনশ্চ কহিল, হিরু নাকি জিজ্ঞেস করেছিল, ঠাকুরমশাই, পরকালে কি জবাব দেবো ? তার মনিব বলেছিলেন, সে পাপ আমার—আমি তার জবাব দেবো । হিরু জিজ্ঞেস করেছিল, তাদের গতিই বা কি হবে ঠাকুর ? ঠাকুরমশাই হেসে বলেছিলেন, তারা আমার স্ত্রী, তোর নয়। তৈরি এত দরদ কিসের? যাদের চোখে দেখিনি, চোপে দেখব না, ভাদের গতি কি হবে না হবে সে চিন্ত। অামারই ৰ কি, তোরই বা কি! আমাদের চিন্তু টাকা রোজগার । অরুণদা, তাই সেদিন আমার ঠাকুরমা তোমার কথায় কেঁদে বলেছিলেন, সন্ধ্যা, জাতে কে ছোট, কে বড়, সে কেবল ভগবান জানেন—মানুষ যেন কাউকে কখনো হীন বলে ঘৃণা না করে ; কিন্তু তখন ত ভাবিনি তার মানে আজ এমন করে বুঝতে হবে । কিন্তু রাত যে বেশি হয়ে যাচ্ছে— 'আমাকে নিয়ে তোমাকে কখনো দুঃখ পেতে হবে না অরুণদা, তোমার মহত্ত্ব, তোমার ত্যাগ আমি চিরজীবনে ভুলবো না। বলিয়া সে নিনিমেষচক্ষে চাহিয়া রহিল । " অরুণ অনিশ্চিত-কণ্ঠে সঙ্কোচের সঙ্গিত বলিল, কিন্তু এখন ত তোমার সঙ্গে আমি যেতে পারিনে সন্ধ্যা !