পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ 8 বামুনের মেয়ে ওই যে তুমি বললে আরনি না কি, তাই দু’ফোট দিয়ে দাও । দিদিঠাকরুণ—মুখুয্যেমশায়ের ওষুধটা না হয়— সন্ধ্যা অন্তরে ব্যথা পাইয়া কহিল, আমি কি বাবার চেয়ে বেশি বুঝি, রামময় ? রামময় লজ্জিত হইয়া বলিল, না--তা না—তবে মুখুয্যেমশায়েব ওষুধটা বড় জোর ওষুধ কি-না, দিদিঠাকরুণ—আমি রোগ মামুষ— বরঞ্চ গিয়েই না হয় সাতরাদের মেধেটাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে পাঠিয়ে দেবে-কাল থেকে তার পেট নাবাচ্চে—দাঠাকুরের ওষুধ দিলেই সে ভাল হয়ে যাবে। আমাকে ঐ তামার ওষুধটাই আজ দাও দিদিমণি ! সন্ধ্য বিষন্নমুখে কহিল, আচ্ছা, এসে এইদিকে । এই বলিয়া সে রামময়কে সঙ্গে লইয়া বারান্দ দিয়া পাশের একটা ঘরে চলিয়া গেল। জগদ্ধাত্রী ঠাকুরঘরের জন্য এক সন্ড জল আনিতে পুকুরে গিয়াছিলেন, বাড়ী ঢুকিয়াই জলপূর্ণ কলসীটা দাওয়ার উপর ধপ, করিয়া বসাইয়া দিয়া ক্রুদ্ধস্বরে ডাক দিলেন, সন্ধ্যে ? সন্ধ্য। ঘরের মধ্যে হইতে সাড়। দিল, যাই মা । মা কহিলেন, তোর বাবা এখনো ফেরেনি ? ঠাকুরপূজে আঙ্গ তা হলে বন্ধ থাক ? মেয়ে বাহির হইয়া আসিয়। বলিল, বাবা ত অনেকক্ষণ এসেচেন, মা ! তেল মেখে নাইতে গেছেন। কই, পুকুরে ত দেখলুম না ? তিনি যে কোথায় ছুটিয়া গেলেন সন্ধ্য। তাহ জানিত ; একটু চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, আজ বোধ হয় তা হলে নদীতে গেছেন। অনেকক্ষণ হ’লো—এলেন বলে ।