পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(OH বামুনের মেয়ে অরুণ কাছে আসিয়া আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিল, ই, কিন্তু তোমাকে এমন শুকৃনে দেখাচ্ছে কেন ? আবার জ্বর নাকি ? সন্ধ্যা বলিল, ঐ-রকম কিছু একটা হবে বোধ হয় ; কিন্তু তোমার চেহারাটাও ত খুব তাজা দেখাচ্ছে না। অরুণ হাসিয়া কহিল, চেহারার আর অপরাধ কি ? সারাদিন নাওয়া-খাওয়া নেই—আচ্ছা প্যাটার্ন ফরমাস করেছিলে যা হোক, খুঁজে খুজে হয়রান । এই নাও । এই বলিয়া পকেট হইতে একটা কাগজের মোড়ক বাহির করিয়া সন্ধ্যার হাতে গুজিয়া দিয়া বলিল, খুড়ীমা কই ? কাক বরিয়েচেন বুঝি ? গেল শনিবারে কিছুতেই বাড়ী আসতে পারলাম না—তাই ওটা আনতে দেরী হয়ে গেল। কি বুনবে, পাখী পক্ষী, না ঠাকুরুদেবতা ? না গোলাপফুলের-— সন্ধ্যা কহিল, সে ভাবনার ঢের সময় আছে ; কিন্তু যা আনতে সাত দিন দেরী হ’লে, তা দিতে কি ঘণ্টাখানেক সবুর সইত না ? ইষ্টিসান থেকে বাড়ী না গিয়ে এখানে এলে কেন ? অরুণ সহাস্তে কহিল, নাওয়া-খাওয়া ত ? সে সন্ধ্যার পরে। কিন্তু ঘন ঘন এত অমুখ হতে লাগল কেন বল ত ? তাহার ‘সন্ধ্যা’ কথাটার প্রতি একটা প্রচ্ছন্ন নিগূঢ় কটাক্ষ সন্ধ্যার কণমূলে আঘাত করিয়া একটখানি রাঙা করিয়া দিল, কিন্তু যেন লক্ষ্যই করে নাই এমনিভাবে সে রাগ করিয়া কহিল, ভবিষ্ট বা আর বাকি কি অরুণদা ? যাও, আর মিছিমিছি দেরী কবতে হবে না। প্রত্যুত্তরে অরুণ পুনরায় হাসিয়া কি একটা বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু জগদ্ধাত্রীর মুখের দিকে চাহিয় তাহার নিজের মুখের কথা মুখেই রহিয়া গেল। তিনি ক্রোধে সমস্ত মুখখানা কলো করিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিলেন এবং কস্তাকে লক্ষ্য করিয়া