8○ বামুনের মেয়ে সন্ধ্যা কহিল, দুঃখী অনাথ মেয়ে দুটোকে ঝাট। মারা ত শক্ত কাজ নয় মা, কিন্তু ওরা কি কারও কোন ক্ষতি করেচে ? গোলক ইহার জবাব দিলেন । কহিলেন, ক্ষতি করে বই কি । পরশু বেড়িয়ে যাবার সময় দেখি পথের ওপর দাড়িয়ে ছাগলটাকে ফ্যান খাওয়াচ্ছে। ছিটকে ছিটকে পড়চে ত? বলিয়া তিনি জগদ্ধাত্রীর মুখের পানে চাহিলেন। জগদ্ধাত্রী তৎক্ষণাৎ সমর্থন করিয়া কহিলেন, পড়বে বই কি মামা । গোলক কহিলেন, তবে সেই বল । না জেনে সাথে র বিষ খাওয়া যায়, কিন্তু জেনে ত আর পারা যায় না ! সন্ধ্যার প্রতি চাহিয়া হাসিয়া কহিলেন, তোমার কাচ বয়স নাতনী, তুমি না হয় রাত্তিরেও নাইতে পারে, কিন্তু আমি ত পারিনে । @ সন্ধ্যা অন্তরের দুৰ্দ্ধমনীয় ক্রোধ চাপিয়া রাখিয় বলিল, সে জানি ঠাকুদ, কিন্তু যাব যখন ওদের স্থান দিয়েচেন, তখন আর কোথাও একটা আশ্রয় না দিয়েও ত তার অপমান করতে পারিনে । মেয়ের এই মান-অপমানের ধারণায় মায়ের মুখ দিয়া রাগে কথা বাহির হইল না ; কিন্তু গোলক বলিলেন, বেশ ত, তারঙ্গ বা অভাব কি সন্ধ্যা ? অরুণের বাড়ীর পিছনে ত ঢের জায়গা আছে, তাকেই বল না আশ্রয় দিতে। বাগদী-দ্বলে হোক, তবু তারা হি –তাতে জাত যাবে না। এই বলিয়া তিনি জগদ্ধাত্রীর মুখের দিকে চাহিয়া মুহ মৃদু হাসিতে লাগিলেন। তাহার রসিকতার রস-গ্রহণ জগদ্ধাত্রী যত বেশী না করুন, অরুণের কথায় পাছে র্তাহার কাণ্ডজ্ঞানহীন মেয়েটা ভয়ানক কঠোর কিছু বলিয়া বসে এই ভয়ে তাহার উৎকণ্ঠার অবধি রহিল না। ঠিক তাহাই ঘটিল। সন্ধ্যার কণ্ঠস্বরে পরিহাসের তরলতা
পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।