36. বামুনের মেয়ে জগদ্ধাত্রী চোখ মুছিয়া করুণকণ্ঠে কহিলেন, কোথায় পাবে। মামা এ সুবিধে ? তবে ঘর-জামাই— গোলক কথাটা শেষ করিতেও দিলেন না, বলিলেন,ঠি ছি, অমন কথা মুখেও আনিস্নে জগো, ঘর-জামাইয়ের কাল অংর নেই, তাতে বড় নিন্দে । আর যদিও বা একটা গায়ার-গোবিন্দ ধরে আনিস্, গাজা-গুলি আর মাতলামি করেই তোর যথাসৰ্ব্বঙ্ক পুঁড়িয়ে দেবে। বলি, নিজের কথাটাই একটু ভেবে দেখ, না। ইহার নিহিত ইঙ্গিত অনুভব করিয়া জগদ্ধাত্রী চক্ষের নিমেষে উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন—বলিলেন, চিরকালটাই দখচি মামা, চিরকালটাই জলে পুড়ে মরচি। গোলক মৃদু হাস্য করিয়া বলিলেন, তবে তাই বল ; বিন কাজকৰ্ম্মে বসে বসে খেলেই এমনি হবে। এ কি আর তার মত বৃদ্ধিমতী বুঝতে পারে না ? 酸 জগদ্ধাত্রী আপ্যায়িত হইয়া কহিলেন, বুঝি বষ্ট কি, ভেতরে ভেতরে সব বুঝি ; কিন্তু আমি মেয়েমানুষ, কোনদিকে চেয়ে যে কুলকিনারা দেখতে পাইনে । গোলক আশ্বাস দিয়া কহিলেন, পাবি, পাবি। তাড়াতাড়ি কি— দেখি না একটু ভেবে-চিন্তে। কিন্তু আজ যাই, সন্ধ্যা প্রয়ে গেছে। জগদ্ধাত্রী মিনতি করিয়া বলিলেন, মামা, দাড়িয়ে দাড়িয়েই রইলে, একটু বসবে না ? গোলক বলিলেন, না না, সন্ধ্যা-আহ্নিকের সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে —আজ বিলম্ব করব না। এই বলিয়া তিনি ধীরে ধীরে বহির হইয়া গেলেন । জগদ্ধাত্রী তাহাকে আগাইয়া দিতে সদর দরজার বাহিরে পৰ্য্যস্ত সঙ্গে সঙ্গে অগ্রসর হইয়া গেলেন ।
পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।