এক
পাড়া-বেড়ানো শেষ করিয়া রাসমণি অপরাহ্ণবেলায় ঘরে ফিরিতেছিলেন। সঙ্গে দশ-বারো বৎসরের নাতিনীটি আগে আগে চলিয়াছিল। অপ্রশস্ত পল্লীপথের এধারে বাঁধা একটি ছাগশিশু ওধারে পড়িয়া ঘুমাইতেছিল। সম্মুখে দৃষ্টি পড়িবামাত্র তিনি নাতিনীর উদ্দেশ্যে চীৎকার করিয়া উঠিলেন, ওলো ছুঁড়ী, দড়িটা ডিঙুস্নি, ডিঙুস্নি। ডিঙুলি? হারামজাদী সগ্গপানে চেয়ে পথ হাঁটচ। চোখে দেখতে পাও না যে ছাগল বাঁধা রয়েচে!
নাতিনী কহিল, ছাগল ঘুমোচ্চে ঠাকুমা।
ঘুমুচ্চে! আর দোষ নেই? এই শনি-মঙ্গলবারে কি না তুই দড়িটা সচ্ছন্দে ডিঙিয়ে গেলি?
তাতে কি হয় ঠাকুমা?
কি হয়? পোড়ারমুখী বামুনের ঘরের ন’-দশ বছরের বুড়ো-ধাড়ী মেয়ে এটা শেথোনি যে, ছাগল-দড়ি ডিঙোতে মাড়াতে নেই—কিছুতে নেই! আবার বলে কি না, কি হয়! না বাপু ব্যাটা-বেটীদের ছাগল-পোষার জ্বালায় মানুষের পথে-ঘাটে চলা দায় হ’লো। এ্যাঁ! এই মঙ্গলবারের বারবেলায় মেয়েটা যে দড়িটা ডিঙিয়ে ফেললে—কেন? কিসের জন্যে পথের ওপর ছাগল বাঁধা? বলি তাদের ঘরে কি ছেলেমেয়ে নেই? তাদের কি একটা ভালো-মন্দ হতে জানে না?
অকস্মাৎ তাঁর দৃষ্টি পড়িল বারো-তেরো বছরের একটি দুলেদের মেয়ের প্রতি। সে ত্রস্ত ব্যস্ত হইয়া তাহার ছাগশিশুটিকে সরাইবার জন্য আসিতেছিল। তখন অনুপস্থিতকে ছাড়িয়া তিনি উপস্থিতকে