[ ] বোধ করি দিন দুষ্ট পরে হইবে, জগদ্ধাত্রী তাহার পুষ্করিণী হইতে স্নান করিয়া বাড়ী ফিরিতেছিলেন, পথের মধ্যে রাসমণি দেখা দিলেন। র্তাহার সমস্ত চোখ-মুখ উত্তেজনা ও আগ্রহের আশিয্যে কাদোকাদে হইয়া উঠিয়াছে; কাছে মাসিয়াগদগদ কণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, জগো, মা অামার, তোর ওই পাগলিমেয়েটা কি শেষে এমন তপিস্তেই করেছিল! অ্যা, এ যে স্বপনের অতীত ! জগদ্ধাত্রী কিছুই বুঝিলেন না, কিন্তু এর মুখে কেবল মেয়েটার নাম শুনিয়াই মনে মনে ভয় পাইলেন। উদ্গ্ৰীব কষ্টয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, কি হয়েচে মাসি ? কি করেচে সন্ধ্যে ? রাসমণি বললেন, যা করেচে তা পৃথিবীতে কোন ময়ে কবে করেচে শুনি ? যা, ভিজে কাপড়ে, ভিজে চুলে গিয়ে শ্রীধরকে সাষ্টাঙ্গে নমস্কার কর্গে। পঞ্চাননের আর বিশালাক্ষার ধানে পূজে পাঠিয়ে দি গে ; কিন্তু আমাকে বাছা, ইষ্টি-কবজখানি গলায় ধারণ করতে একটি সরু সোনার গোট তৈরি করিয়ে দিতে হবে, ৫ কিন্তু আগে থেকে বলে রাখচি । জগদ্ধাত্রী আকুল হইয়া কহিলেন, কি হয়েচে মাসি থলে না বললে বুঝব কি করে ? রাসমণি একটু হাসিয়া বলিলেন, খুলে বলতে হবে ? বে বলি। তোরা মায়ে-ঝিয়ে ঢের পুণ্যি করেছিলি, নইলে এ কখনো হয় না। ভেবে মরছিলি মেয়েটার বিয়ে দিবি কি করে,-এখন যা –একেবারে রাজার শাশুড়ী হয়ে ব’ গে। কথা শুনিয়া জগদ্ধাত্রী দুই চক্ষু কপালে তুলিয়া চাহিয়া রছিলেন।
পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।