পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বামুনের মেয়ে ●br আসিল গোলক চাটুয্যের নরক-কুণ্ডে ! যে গোলক কস্তার মাতামহের অপেক্ষা বয়োজ্যেষ্ঠ, তাহারই হাতে সমর্পণ করার চেয়ে যে তাহার মৃত্যু ভাল, এ তাহার বুকের মধ্যে অগ্নিশিখার স্তায় জ্বলিতে লাগিল, কিন্তু মুখ দিয়া 'না' কথাটাও উচ্চারণ করিতে পারিলেন না। তিনি নিজেও নাকি ব্রাহ্মণ কুলীনেরই মেয়ে-সমাজে এবং পরিবারে ইহা যে কিছুই বিচিত্র নয়—ইহার চেয়ে বহুতর তুর্গতি নাকি স্বচক্ষে দেখিয়াছেন—তাই নিজের মেয়ের কথা স্মরণ করিয়t অন্তরটা ধৃ ধূ করিয়া জ্বলিতে থাকিলেও, ইহাকে অসম্ভব বলিয়া নিবাইয়াফেলিবার একবিন্দুজল কোনদিকে চাহিয়া খুজিয়া পাইলেন না। একাকী বসিয়া নিঃশব্দে কেবলই অশ্রু মুছিতে লাগিলেন, এবং কেবলই মনে হইতে লাগিল, অচির-ভবিষ্যতে হয়ত ইহাই একদিন সত্য হইয়া উঠিবে—হয়ত এই মানুষটার দুর্জয় বাসনাকে বাধা দিবার কোন উপায় তিনি খুজিয়া পাইবেন না। উহার সেদিনের সকৌতুক রহস্যালাপের কথাগুলাই তাহার ঘুরিয়া ঘুরিয়া কেবলই স্মরণ হইতে লাগিল—তাহার মধ্যে যে এতখানি গরল গোপন ছিল, তখন তাহা কে সন্দেহ করিতে পারিত ! সদরের দরজা দিয়া সন্ধ্যা একখানা চিঠি পড়িতে পড়িতে এক-পা এক-পা করিয়া প্রবেশ করিল। পড়া বোধ হয় তখনও শেষ হয় নাই, কোনদিকে না চাহিয়াই ডাক দিল, মা, মা গো ? জগদ্ধাত্রা তাড়াতাড়ি চোখ দুটা মুছিয়া সাড়া দিলেন, কেন মা ? তাহার ভারি গলার আওয়াজে সন্ধ্য। চমকিয়া মুখ তুলিল, ধীরে ধীরে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কি হয়েচে মা ? জগদ্ধাত্রী কন্যার তীক্ষ্ণদৃষ্টি হইতে মুখ ফিরাইয়া বলিলেন, কিছুই ত হয়নি মা । সন্ধ্যা আরও নিকটে আসিয়া নিজের অঞ্চলে মায়ের অশ্ৰুজল