সবিস্তারে আহরণ করিতে তিনি কৌতূহলী হইয়া প্রশ্ন করিলেন, বটে? বলি, কবে তাড়িয়ে দিলে লো?
পরশু আত্তিরে মাঠান্।
ও—তুই এককড়ে দুলের মেয়ে বুঝি? তাই বল্। এককড়ে মরতে-না-মরতে বুড়ো তোদের বের করে দিলে? ছোটজাতের মুখে আগুন! তা বাপু, দিলে বলেই কি তোরা বামুন-পাড়ায় এসে থাকবি? তোদের আস্পদ্দা ত কম নয় লা? কে আনলে তোর মাকে? রামতনু বাড়ুয্যের জামাই বুঝি? নইলে এমন বিদ্যে আর কার! ঘর-জামাই ঘর-জামাইয়ের মত থাক্, তা না, শ্বশুরের বিষয় পেয়েচিস্ বলে পাড়ার মধ্যে হাড়ি-ডোম-দুলে ক্যাওরা এনে বসাবি?
এই বলিয়া রাসমণি হাঁক দিয়া ডাকিলেন, বলি সন্ধ্যা—ও সন্ধ্যা, ঘরে আছিস্ গা?
সামান্য একটুখানি পোড়ো-জমির ওধারে রামতনু বাঁড়ুয্যের খিড়কী। তাঁহার ডাক শুনিয়া অদূরবর্ত্তী খিড়কীর দ্বার খুলিয়া একটি উনিশ বছরের সুশ্রী মেয়ে মুখ বাহির করিয়া সাড়া দিল—কে ডাকে গা? ওমা, দিদিমা যে! কেন গা? বলিতে বলিতে সে বাহির হইয়া আসিল।
রাসমণি কহিলেন, তোর বাপের আক্কেলটা কি-রকম শুনি বাছা? তোর দাদামশাই রামতনু বাড়ুয্যে—একটা ডাকসাইটে কুলীন, তার ভিটে-বাড়িতে আজ প্রজা বসল কি-না বাগ্দী-দুলে! কি ঘেন্নার কথা মা!
এই বলিয়া গালে একবার হাত দিয়াই পুনশ্চ কহিতে লাগিলেন, তোর মাকে একবার ডাক্। জগো এর কি বিহিত করে করুক, নইলে চাটুয্যেদাদাকে গিয়ে আমি নিজে জানিয়ে আসব। সে ত একটা জমিদার! একটা নামজাদা বড়লোক! সে কি বলে একবার শুনি।