বামুনের মেয়ে ჯ)b• ছুটি আরক্ত, পল্লবপ্রান্তে অশ্রুর আভাস যেন তখনও বিদ্যমান— সেই সজল দৃষ্টি গোলকের মুখের প্রতি স্থির করিয়া অকস্মাৎ গাঢ়কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, তুমি কি প্রিয়বাবুর মেয়ে সন্ধ্যাকে বিয়ে করতে চেয়েচো ? আমাকে ঠকিয়ে না, সত্যি ব’লো ! গোলক থতমত খাইয়া হঠাৎ জবাব দিতে পারিলেন না, কিন্তু পরক্ষণেই বলিয়া উঠিলেন, আমি ? সন্ধ্যাকে ? নাঃ ! কে বললে ? জ্ঞানদা কহিল, যেই বলুক। রামুদিদিকে তুমি তার মায়ের কাছে পাঠিয়েছিলে ? সামনের অভ্রাণেই সমস্ত স্থির হয়ে গেছে ? ভগবানের দোহাই, সত্যি কথা বলে । গোলক অফুট তর্জনে শাসাইয়া বলিলেন, রাসি-বামনি বলে গেছে ? আচ্ছা, দেখচি তাকে ! আমি— জ্ঞানদা বলিয়া উঠিল, কেন তবে তুমি আমার এ সৰ্ব্বনাশ করলে ? 飄 মুখ দেখাবার, দাড়াবার যে আর আমার কোথাও স্থান নেই। বলিতে বলিতেই তাহার বিকৃত কণ্ঠ বুক ফাট ক্ৰন্দনে একেবারে সহস্রধারে ফাটিয়া পড়িল । গোলক ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন। চারিদিকে সভয় দৃষ্টিপাত করিয়া হাত তুলিয়া চাপা গলায় বলিতে লাগিলেন, আহা ! কর কি, কর কি ! লোকজন শুনতে পাবে যে ! মিছে—মিছে—মিছে কথা গো ! ঠাট্টা— - জ্ঞানদা কাদিতে কঁাদিতে বলিল, না কখখনো ঠাট্ট নয়— কখখনো এ মিথ্যে নয় । এ সত্যি ! এ সত্যি ! তুমি সব পারে। তোমার অসাধ্য কাজ নেই। না না, বলচি এ ঠাট্টা—তামাসা—নাতনী সুবাদে-আহ হ ! চুপ কর না—বি-চাকর এসে পড়বে যে ! বলিতে বলিতে গোলক খটু খটু করিয়া শশব্যস্তে পলায়ন করিলেন ।
পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।