বামুনের মেয়ে *o বুঝা গেল এ লাঠি যার তাকে চোখের চেয়ে লাঠির উপরে চলাচলের পথটা অধিক নির্ভর করিতে হয় । , পরক্ষণেই একটি মধ্যবয়সী স্ত্রীলোকের পশ্চাতে একজন বুদ্ধ ব্যক্তি লাঠির দ্বারা পথ ঠাহর করিতে কারঔেপ্রবেশ করিলেন এবং ডাকিয়া বলিলেন, আমার মা কোথায় গো ? জ্ঞানদা উঠিয়া আসিয়া তাহার পদতলে গলবস্ত্র হওয়া প্ৰণাম করিয়া উঠিয়া দাড়াইল । বুদ্ধ মানুষ চিনিতে না পারিলেও চেহারাটা দেখিতে পাইলেন । তিনি আশীৰ্ব্বী করিতে গিয়া কাদিয়া ফেলিয়া বলিলেন, বুড়ো-বুড়ীকে এমন কল্পে ভুলে কি করে আছিস মা ? যে স্ত্রীলোকটি সঙ্গে আসিয়াছিল, সে গড় হইয়া প্ৰণাম করিয়া কহিল, তা সত্যি বৌদিদি। বুড়ী শাশুড়া মরে—কেবল মুখে তার আমার বোমাকে নিয়ে এসো—আমার বেীমাকে এনে দাও । কেমন করে এতদিন ভুলে আছে বল ত ? জ্ঞানদা এ অভিযোগের কোন জবাব দিল না । কেবল এক হাতে অশ্রু মুছিতে মুছিতে অন্ত হাতে বৃদ্ধ শ্বশুরের হাত ধরিয়া র্তাহাকে বারান্দায় অনিল এবং স্বহস্তে আসন পাতিয়া তাহাকে বসাইয়া দিয়া নীরবে নতমুখে দাড়াইয়া রহিল। ৰুদ্ধ উপবেশন করিয়া বলিতে লাগিলেন, চাটুয্যেমশাইকে ছুখান৷ চিঠি দিলাম, কিন্তু একটারও জবাব পেঙ্গাম না । মনে ভাবলাম, তিনি বড়লোক, নানা কাজ তার, আমাদের মত গরীবকে উত্তর দেবার কথা হয়ত র্তার মনেই নেই ; কিন্তু মাত আমার এই ছঃখীরই ঘরের লক্ষ্মী— - যে দাসী সঙ্গে আসিয়াছিল অসম্পূর্ণ কথার মাঝখানেই বলিয়া উঠিল, হলেই বা ভগিনীপতি বড়লোক, তাই বলে ঘরের বৌকে আর কে কতদিন পরের বাড়ী ফেলে রাখতে পারে, বৌদিদি ? তা ছাড়া,
পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।