বামুনের মেয়ে ৯২ সাহিল। তাহার হইয়া রাসমণি বলিলেন, তোমাকে ছাড়া ও আর কাউকে বিশ্বাস করে না বাবা, তোমার ওষুধ যেন ওর ধন্থঙ্করী। কিন্তু ব্যামোটা যে তা নয় পিওনাথ । আদিষ্টের ফেরে পোড কপালীর অসুখটা যে হয়ে দাড়িয়েচে উণ্টে ! প্রিয় হাতটা তুলিয়া কহিলেন, উণ্টে নয় মাসি, উণ্টে নয়। বিপনে মিত্তিরের হাতে পড়লে তাই হয়ে দাড়াতে বটে ; কিন্তু কিছু ভয় নেই, এ প্রিয় মুখুয্যে · রাসমণি ললাটে একটুখানি করাঘাত করিয়া বলিলেন, তুমি বঁাচাও ত ভয় নেই সত্যি, কিন্তু সৰ্ব্বনাশী যে এদিকে সৰ্ব্বনাশ করে বসেচে ! এখন তার মত একটু ওষুধ দিয়ে উদ্ধার না করলে যে কুলে কালি পড়বার যো হ’লে বাবা । কিন্তু এতবড় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছেও তাহার শেষ কথাটা যে বেশ প্রাঞ্জল হইয়া উঠিল না, তাহার মুখের পানে চাহিয়া মাসি চক্ষের নিমিষে অনুভব করিলেন এবং ইহাই যথেষ্ট পরিস্ফুট করিতে প্রিয়নাথকে তিনি ঘরের একধারে টানিয়া লইয়া গিয়া কানে কানে গুটিকয়েক কথা বলিতেই সে চমকাইয়া উঠিয়া কহিল, বলকি মাসি ? জ্ঞানদা—? মাসি কহিলেন, কি আর বলব বাবা, কপালের লেখা কে খণ্ডাবে বল ? এখন দাও একটু ওষুধ পিওনাথ, যাতে গোলক চাটুয্যের উচু মাথা না নীচু হয় ! একটা দেশের মাথা, সমাজের শিরোমণি । পুরুষমানুষ—তার দোষ কি বাবা ? কিন্তু তার ঘরে এসে তুষ্ট ছুড়ি কি ঢলাচলিটা করলি বল দিকি ! প্রিয়র মুখ ফ্যাকাশে হইয়া গেল। একবার জ্ঞানদার মুখখানা তিনি দেখিবার চেষ্টা করিলেন, তার পরে ধীরে ধীরে কহিলেন, তোমরা বরঞ্চ বিপিন ডাক্তারকে খবর দাও মাসি, এসব ওষুধ আমার
পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।