পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ፃ8 বারীদ্রের আত্মকাহিনী আমি ও আর ২১টি ছেলে। প্ৰথমদিন এইভাবে এক জায়গায় একত্র ছাড়া পাইয়া সে কি উল্লাস, কি হট্টিরোল। কিছুক্ষণ ধরিয়া হুড়াহুড়ি, মারামারি, ধস্তাধস্তির পর তবে আসার জমিল । নরেন গোসাই এতদিন আলাদা এক কুঠরীতেই ছিল, এখন সকলের সন্দেহভাজন রাগের পাত্র, সেও আসিয়া ৩নং ওয়ার্ডে জুটিল। সেই প্ৰথম চোট রসিকতার মারামারিটাকে ছল করিয়া, উপেন ও আর কয়জন মিলিয়া তাহাকে একবার মনের সুখে প্ৰহার দিল । সে তখনি জেলার বাবুর কাছে নালিশ ফরিয়াদ করিয়া জানাইয়া আসিল যে, “এ গুণ্ডার দল আমায় প্ৰাণে না মারিয়া ছাড়িবে না।” সেইদিনই তাহাকে ভিন্ন করিয়া যুরোপীয়ান ওয়ার্ডে রাখা হইল। এইখানে আসার পর আর এক সুবিধা জুটিয়া গিয়া জেলখানার এই চড়ুইভাতির হট্টিগোলে জীবন আরও মধুর হইয়া উঠিল। আমাদের আত্মীয়-স্বজন বাহির হইতে খাবার ও ফলপাকড় পাঠাইতে লাগিলেন । ৩নং ওয়ার্ডে বোধহয় বেশী দিন থাকি নাই, তাহার পর প্ৰভাস দে ও পণ্ডিত পঞ্চানন তর্করিত্নের সহিত একদল ছেলে ধরা পড়ায়, এখানে স্থান সন্ধুলান হইবে না ভাবিয়া, ১নং ওয়ার্ডে আমাদের লীলাভূমি নির্দিষ্ট হইল। সেখানি একটি বড় হল, সামনে তার আলিপুর জেলের পাকশালা। এবার ভর হাট বিপুল আনন্দে ভরিল, প্ৰায় দিবারাত্ৰ চব্বিশ পহরী হরর চলিতে লাগিল। কখনও গানের আসর, কখনও লম্বফবম্বফ, কখনও রঙ্গরস ও প্ৰভাস দে’কে ক্ষেপানো-ইহার আর বিরাম ছিল না। বাহির হইতে মাছ মাংস ফল মূল এত আসিত যে, খাইয়া ফুরানো দায় হইত ; কঁাচা মাছ বা মাংস আসিলে রন্ধনে সিদ্ধহস্ত দ্ৰৌপদী অংশে অবতীর্ণ, হেম দা’ তাহা জেলের উনানে রাধিয়া আনিতেন। প্ৰতি রবিবারে ও মাঝে মাঝে অন্য দিনও আমাদের আত্মীয়স্বজন জেলে দেখা করিতে আসিতেন। জেলের অফিস ঘরে বাহিরের পাখী। আর খাচার পাখীর একটা জটিল লাগিয়া যাইত। যে যাহার