পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

1 سb ] বলুন দেখি, ইহাতে কি রামের ঈশ্বরত্ব প্রতিপন্ন হইতেছে না ? শ্ৰীমদ্ভাগবতের একাদশ স্কন্ধে পঞ্চম অধ্যায়ের ২৩শ শ্লোকান্ধের প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করুন। উহাতে প্রকাশ,— W “এবংবিধানি কৰ্ম্মাণি জন্মানি চ জগৎপতেঃ ” তাৎপৰ্য্য,—“জগৎপতি জগদীশ্বরের জন্ম ও কৰ্ম্মব্যাপার এই প্রকার ।” স্বষ্টিরক্ষা, দুষ্টদমন ও শিষ্টপালন প্রভৃতি কাৰ্য্যই তাহার লীলার পরিচয় । যখনই প্রয়োজন, তখনই সেই নিগুণ পুরুষ সত্ত্ব, রজ ও তম গুণের অধীন হইয়া প্রাতৃভূত হন । আপনার সুথেচ্ছ ও ভোগবুত্তি চরিতার্থ করিবার জন্য ঈশ্বরের অবতাররূপে অবতারণ নহে, লোক-শিক্ষা-দানই ইহার অন্যতর উদেশ্য । আমরা পূর্বেই উল্লেখ করিয়াছি যে, রামায়ণ কেবল লক্ষণাক্রান্ত মহাকাব্য বলিয়া গণ্য হইতে ও তল্পিবন্ধন খ্যাতি লাভ করিতে পারে না, শ্রীতিস্মৃতির বিহিত মত যেরূপ বিধি-নিষেধ বিরচিত হইয়াছে, ইহাও কিয়দংশে আকার ইঙ্গিতে সেইরূপ । “একাদশাং ন ভুঞ্জীত, নিদ্রাং জহাং গৃহী রাম । নিত্যমেবারুণোদয়ে” অর্থাৎ, "একাদশীতে ভোজন করিবে না ; হে রামচন্দ্র । নিত্যকাল অরুণোদয়সময়ে নিদ্র পরিত্যাগ করা গৃহী লোকের কৰ্ত্তব্য ;' এই বাক্য ষেরূপ বিধিবদ্ধ এবং ইহা না করিলে যেরূপ প্রত্যবাষ্ট্রগ্রস্ত হইতে হয়, রামায়ণের ফল শ্রীতিও কতকাংশে ইহার অনুরূপ । প্রমাণ-স্বরূপে উঞ্চত হইল ;– “রামায়ণং বেদসমং গ্রাদ্ধেযু শ্রাবয়েবুেধঃ।” উত্তরকাণ্ড ( ১২৪ ৩ ) তাৎপৰ্য্য,—“এই রামায়ণ বেদতুল্য, শ্রাদ্ধকালে পণ্ডিতের মুখে উহা শুনিতে হয়।” যাহা হউক, বৰ্ত্তমান কালে র্যাহারা ভক্তি-বিশ্বাসকে দূরে রাখিয়া, শুষ্ক হৃদয়ে শুষ্ক ধৰ্ম্মের অনুসন্ধায়ী, র্যাহারা প্ৰত্যক্ষ ভিন্ন পরোক্ষ প্রমাণ বিশ্বাস করেন না, র্যাহাঁদের যুক্তিতে মহেশ্বর মহাদেবকে রজতগিরির স্যায় আকৃতি, শ্মশানে মশানে বাস, চিতাভস্ম বিলেপন এবং কুচুনীপাড়ায় গমনাগমন প্রভৃতি পৰ্য্যালোচনায় সুদীর্ঘ গবেষণার ফলে, চীন বা তিববতীয় লোক বলিয়৷ অবধারিত হইয়াছে, সাহারা ভাষাতত্বের সমুদ্ধারে বদ্ধপরিকর হইয়া, কশ্যপের বাসস্থানের নামানুসারে “কাম্পিয়ান সি” নামকরণের কারণ অবধারণ করিয়াছেন, যাহারা ঐতিহাসিক তত্ত্ব অনুসন্ধান করিতে গিয়া, দশটি কালিদাসের অবতারণা করিয়া থাকেন, যাহারা দূরদর্শিতা-প্রভাবে মনুকে সৰ্ব্বনাশের কারণ বলিয়া, প্রকাশ ও অপ্রকাশ্য স্থানে চীৎকার করিয়া, অজাতশ্মশ্র বালকের নিকট যশোভাজন হইয়া থাকেন, তাহদের নিকটে আমাদের শাস্ত্রীয় কথা কত দূর স্থিতিলাভ করিবে, র্তাহারা এ কথা কত দূর নিরপেক্ষভাবে শুনিবেন, তাহ বলিবার প্রয়োজন নাই ; তবে সংক্ষেপত: এই বলিলে পৰ্য্যাপ্ত হইবে যে, যাহাদের চক্ষু দূষিত ও হরিদ্রাক্ত, তাহার যে দিকে দৃষ্টিপাত করে, তাহা হরিদ্রাক্ত ভিন্ন অন্ত বর্ণ দেখিতে পায় না । ফল কথা, এরূপ ছিদ্রান্বেষী ধৰ্ম্মবিদ্বেষ্টগণের কথায় কি আসে যায় ? আমরা জানি, ইহাতে আমাদের উপকার ভিন্ন অপকার নাই ; কারণ, আমাদের প্রতি আক্রমণ ও কটুক্তি না করিলে, আমরা কখনই শাস্ত্র-দর্শনে চেষ্ঠিত হইতাম না । যাহা হউক, এতদুপলক্ষে বাগাড়ম্বর নিম্প্রয়োজন । । বলা বাহুল্য যে, শিক্ষার সঙ্গে ধৰ্ম্মজ্ঞান ও সদাচার যেরূপ প্রার্থনীয় এবং তাঁহাতে মানবের মন বেরূপ উন্নত হয়, যেরূপ বিমল আকাশে পূর্ণশশধরের শোভা, যেরূপ দক্ষিণানিলের সঙ্গে কুম্বক্ষসৌরভংযোগ, সেইরূপ যদি যোগ্য কবি বা গ্রন্থকৰ্ত্তার