পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘VQ * বাল্মীকি-রামায়ণ পুত্রদিগের মধ্যে রাম সর্ববজেষ্ঠ ও প্রধান, অতএব তাহাকে লইয়া যাইবেন না। আপ{াকে জিজ্ঞাসা করি, রাক্ষসেরা কে ? তাহারা র পুত্র ? হে মুনিবর! তাহদের আকার-প্রকার ও শক্তিই বা কিরূপ ? রামচন্দ্র কিরূপেই বা সেই রাক্ষসদিগের প্রতীকর করিবেন ? হে ব্ৰহ্মন ! আমি বা আমার সেনাগণ কিরূপে সেই মায়াযোধীদিগের সহিত সংগ্রামে সমর্থ হইব, এই সকল বৃত্তান্ত আমার নিকটে বলুন। সেই সকল দুষ্টাশয়দিগের নিকটে কিরূপে স্থিতি করিতে হইবে ? আমি জানি, তাহার বিপুল বলবান। ১-১৫ রাজার উক্তি শ্রবণ করিয়া মুনিবর কহিতে লাগিলেন, পৌলস্ত্য-বংশোদ্ভব রাবণ নামে এক রাক্ষস আছে, সে ব্রহ্মার বরে দৃপ্ত হইয়া সতত ত্ৰৈলোক্যের পীড়া প্রদান করে। বিলুলবলশালী নিশাচরগণ সতত তাহাকে বেষ্টন করিয়া থাকে। হে মহারাজ ! আমরা শুনিয়াছি, সে বৈশ্রবণের সাক্ষাৎ ভ্রাতা, বিশ্রব মুনির পুত্র ; অবজ্ঞা করিয়া সেই নিশাচর নিজে আমাদের যজ্ঞ ধ্বংস করিবে না। যজ্ঞ-ধ্বংসের জন্য সুবাহু ও মারীচ নামক দুই জন রাক্ষসকে পাঠাইয়া দিবে। বিশ্বামিত্রের কথা শুনিয়া তখন নৃপবর মুনিবরকে কহিলেন, আমি সেই দুৰ্বত্ত দশাননের সহিত সংগ্রাম করিতে পারিব না। আপনি এক্ষণে আমার রমের প্রতি প্রসন্ন হউন, জানিবেন, আপনি এই হতভাগের দেবতা ও গুরু। যখন দেব, দানব, গন্ধৰ্ব্ব, যক্ষ ও পন্নগগণ প্রভৃতি রাবণের প্রতাপ সহ করিতে পারে না, তখন মনুষ্যের কথা আর কি বলিব ? সেই রাবণ রণক্ষেত্রে বীর্য্যবানদিগেরও বীর্য্যক্ষয় করিয়া থাকে, অতএব তাহার বা তাহার সৈন্যের সহিত সংগ্রামে সম্মুখীন হইতে আমার সাহস হয় না। আপনি স্বয়ং সসৈন্তেই হউন , বা আমার পুত্ৰগণকে সঙ্গে লউন, কখনই তাহার ব্ৰহ্মন ! আমার পুত্র রামচন্দ্র বালক, মারীচসুবাহুর সহিত সংগ্রামে র্তাহাকে কখনই পাঠাইতে পারিব না। আমি জানি, উক্ত রাক্ষসদ্বয় আপনার যজ্ঞব্যাঘাতক, উহারা সুন্দ উপস্থন্দের পুত্র, বলবান ও সুশিক্ষিত যোদ্ধা, অতএব উহাদের সম্মুখে রামকে পাঠাইতে পারিব না। আপনার অভিপ্রায় হইলে আমি বন্ধু-বান্ধব-বেষ্টিত হইয়া রাক্ষসদিগের একতরের সহিত যুদ্ধ করিতে পারি, অন্যথা সমুহৃদগণে আপনার শরণাপন্ন হইলাম। রাজা দশরথের এরূপ কাতর বাক্য শ্রবণে আশা ভঙ্গ জানিয়া মহর্ষি বিশ্বামিত্র হত হুতাশন যেরূপ প্রদীপ্ত হয়, তাহার ন্যায় ক্রোধবশে প্রজ্বলিত হইয়া উঠিলেন। ১৬-২৮ একবিংশ সগ অনন্তর মহর্ষি বিশ্বামিত্র, নৃপতি দশরথের এইরূপ স্নেহপর্ণ্যাকুল বাক্য শ্রবণে রোষাবিষ্ট হইয়া তাহাকে কহিলেন, আপনি আমার নিকটে প্রথমে প্রতিশ্রত হইয়া এক্ষণে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিতেছেন, জানিবেন, রঘুবংশীয়দিগের পক্ষে এইরূপ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা অযুক্ত এবং ইহাতে রঘুবংশ ধ্বংস হইবে। যদি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ ও বংশধ্বংসই আপনার বাসনা হয়, তাহা হইলে আমি স্বস্থানে প্রস্থান করি, আপনি মিথ্যাপ্রতিজ্ঞ হইয়া সবান্ধবে সুখে কালাতিপাত করুন। বিশ্বামিত্রের এইরূপ ক্রোধ-প্রাবল্য ঘটিলে সমগ্র পৃথিবী বিচলিত এবং সুরগণ পর্যন্ত শঙ্কিত হইলেন । সকল সংসারকে সন্তপ্ত দেখিয়া সে সময়ে ধীর বশিষ্ঠ ঋষি, রাজা দশরথকে কহিলেন, হে রাজন। আপনি সাক্ষাৎ ধর্মের স্যায় ইক্ষাকুকুলে জন্মিয়াছেন, আপনি শ্রমান ও ধীমান, আপনার ধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করা সঙ্গত হয় না। ত্রিলোকে আপনি ৫ । মারীচ সুন্দপুত্র, সুবাহু উপস্থলপুত্র, মাতা বক্ষিণী, সহিত যুদ্ধক্ষেত্রে দাড়াইতে পরিবেন না । হে জগস্ত্যশাপে ইহার রাক্ষস হইয়াছিল।