পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিকাও করিতেছেন। সেই পুণ্য আশ্রম দর্শন করিয়া পরমপ্রীত রাম ও লক্ষণ মহাত্মা বিশ্বমিত্ৰ ঋষিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, হে ভগবন! এ আশ্রম কাহার ? কোন ব্যক্তি এখানে বাস করিয়া থাকেন ? অামাদের জানিতে অতিশয় কৌতুহল জন্মিয়াছে। বিশ্বামিত্র এই কথা শ্রবণমাত্র ঈষৎ হান্ত-পূর্বক কহিলেন, হে রামচন্দ্ৰ ! র্যাহার এই আশ্রম ছিল, বলিতেছি, শ্রবণ কর। লোকে যাহাকে কাম বলিয়া জানে, সেই কন্দপ এখানে মূৰ্ত্তিমান ছিলেন, এই আশ্রমই তাহার। এক সময়ে এই আশ্রমে শিব ধ্যানস্থ হইয়া তপস্যায় নিযুক্ত ছিলেন ; সমাধি ভঙ্গের পর পাৰ্ব্বতীকে পরিণয় করিয়া দেবগণের সহিত বিলাসস্থলে গমন করেন, সেই সময়ে নির্ব দ্ধি অনঙ্গ তদীয় চিত্ত-বিকৃতি উৎপাদন করেন। রুদ্রদেব এই কারণে কোপ করিয়া হুঙ্কার শব্দ পূর্বক তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করেন, তাহাতেই অনঙ্গের অঙ্গ স্বলিত ও ভস্মসাং হইয়া যায়। শিবের ক্রোধাগ্নি হইতে কাম-শরীর বিনন্ট হয়। হে রাঘব ! তদবধি কাম অনঙ্গ নামে আখ্যাত হইয়াছেন। যে স্থানে তাহার অঙ্গ দগ্ধ হইয়া পতিত হইয়াছিল, তাহ অঙ্গদেশ বলিয়া গণ্য হইয়াছে। এই আশ্রমস্থিত ধৰ্ম্মপর মুনিগণ পুরুষপরম্পরাক্রমে মহেশ্বরের শিষ্য, তাহারা নিষ্পাপ । হে শুভদৰ্শন ! সঙ্গমক্ষেত্রে রাত্রি অতিবাহিত করিয়া কল্য পার হইয়া যাইব । অতএব আমরা পবিত্রভাবে এই পুণ্যাশ্রমে প্রবেশ করি, এখানে বাস করা আমাদিগের শ্রেয় বোধ হইতেছে, এখানে থাকিলে মুখে নিশাতিবাহিত এই কথা বলিয়া তাহারা সেখানে করিতে পারিব । মান, জপ ও অগ্নিতে হোম-বিধি সম্পন্ন করিলেন ; অগ্রিমস্থ ঋষিগণ দিব্যজ্ঞানবলে তাহদের কথাবার্তার মৰ্ম্ম জানিতে পারিয়া, পরম প্রীতি লাভ করিলেন এবং নিকটস্থ হইয়া অগ্রে বিশ্বামিত্রকে অর্ঘ্য ও পাতাদি অতিথিসৎকারসামগ্রী প্রদান করিলেন। তৎপরে মুনিগণ রামলক্ষণের সমুচিত আতিথ্যবিধান অদ্য আমরা এই পবিত্র নদীদ্বয়ের ©ፃ ও কুশলাদি জিজ্ঞাসারূপ সৎকার লাভ করিয়া কথাবার্তায় বিশ্বামিত্র প্রভৃতিকে অনুরঞ্জিত করিয়াছিলেন,সেই সকল ঋষিগণ যথাযোগ্য সন্ধ্যোপাসনা করিলেন, পরে সেই ঋষিগণ কর্তৃক আশ্রমে নীত হইয়া বিশ্বামিত্র, রাম ও লক্ষণ রাত্রি অতিবাহিত করিলেন। তাহার এইরূপে সেই কামাশ্রমে মনের সুথে বাস করিলেন ; ঋষিদিগের সহিত মনোহর কথা-প্রসঙ্গে তাহারা সেই রজনী সুখে অতিবাহিত করিলেন । ১-২২ করিলেন, র্ত চতুৰ্বিবংশ সর্গ অনন্তর রজনী প্রভাত হইলে তাহারা দুই ভ্রাত কৃতাহ্নিক বিশ্বামিত্রকে অগ্রবর্তী করিয়া নদীর তীরদেশে উপস্থিত হইলেন। এই অবসরে আশ্রমস্থিত মুনিগণ একখানি নৌকা আনয়ন করিয়া বিশ্বামিত্রকে কহিলেন, আপনি রাজপুত্রদিগকে সঙ্গে লইয়া এই নৌকাতে আরোহণ করুন ; কালবিলম্ব করিবেন না, নিরাপদে যাত্রা করুন। বিশ্বামিত্র তাহদের বাক্যে সম্মত হইয়া এবং সেই ঋষিদিগকে সন্মানিত করিয়া রাজপুত্রদ্বয়ের সমভিবাহারে তরণীযোগে সাগরগামিনী গঙ্গা পার হইতে লাগিলেন। নৌকা যখন নদীর মধ্যভাগে উপস্থিত হইল, তখন উভয় তোয়রাশির পরস্পর সংঘটজনিত তুমুল শব্দ শ্রুতিগোচর হইতে থাকিল। মহাতেজ রামচন্দ্র অনুজের সহিত এ শব্দের কারণ কি ঋষিকে জিজ্ঞাসা করিলেন। হে মুনে ! জলরাশি ভেদ করিয়া তুমুল ধ্বনি শ্রত হইতেছে, ইহা কি ? মুনিবর রামের কৌতুহলসহকারে এরূপ জিজ্ঞাসায় কছিলেন, যাহা বলিয়াছ, ইহা ঠিক। পৰ্ব্বকালে প্রজাপতি,কৈলাস পৰ্ব্বতে মন হইতে একটি দিব্য সরোবর স্বাঃ করেন। উহার নাম মানসসরোবর। তাহা হইতে যে নদী অযোধ্যার অভিমুখে প্রবাহিত হইয়াছে, ব্রহ্মার নিৰ্ম্মিত মানসসরোবর হইতে