পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালকাও দংশন করিতে লাগিলেন। ঐ শিলাসকল বহ্নিসদৃশ হালাহলবিষয়পে প্রাস্তৃত্বত হইতে থাকিল, শেষে এরূপ হইল যে, উহার তেজে মুরাসুর ও নরদিগের সহিত বিশ্বসংসার দগ্ধ হইবার উপক্রম হইল । তখন সুরগণ শঙ্করের শরণাপন্ন হইলেন, এবং “রক্ষা করুন, রক্ষণ করুন" বলিয়া তাহার স্তুতিবাদ করিতে লাগিলেন । তখন এই ভীত শরণাগত দেবগণের প্রার্থনায় দেবদেব মহাদেব সেই স্থানে প্রাহভূত হইলেন এবং সেই সময়ে শঙ্খচক্রধারী ভগবান হরি তথায় উপস্থিত হইলেন। তখন হরি, ত্রিপুরারিকে কহিলেন, সমুদ্র মন্থন করিতে করিতে যাহা অগ্রে উখিত হইয়াছে, তাহা আপনারই প্রাপ্য, যেহেতু আপনি দেবগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তাই আপনি এই স্থানে থাকিয়া এই অগ্রপূজা এই বিষ গ্রহণ করুন। মাধব মহেশকে এই কথা বলিয়াই অন্তহিত হইলেন । ১৯-২৬ তখন দেবগণের কাতরভাব দর্শন ও বিষ্ণুর এরূপ উক্তি শ্রবণ করিয়া শঙ্কর অমৃতের স্যায় এই হালাহল বিষ কণ্ঠে ধারণ করিলেন, এবং দেবগণকে পরিত্যাগ করিয়া ২ তাহদের নিকট হইতে যথাস্থানে গমন করিয়াছিলেন। রাম ! তখন স্বরগণ পুনর্বার মন্থনকার্য্যে নিযুক্ত হইলেন ; দেখিতে দেখিতে মস্থানদণ্ড মন্দরগিরি রসাতলে প্রবিষ্ট হইল। তখন অমরগণ গন্ধৰ্ব্বগণের সমভিব্যাহারে মধুসুদনকে এই বলিয়া স্তব করিতে লাগিলেন, হে প্রভো ! আপনি সকল জীবের গতি—বিশেষতঃ স্বরগণের একমাত্র সহায় । অতএব মন্দরাচলকে উদ্ধার করিয়া আমাদিগকে রক্ষা করুন। কমলাপতি এই উক্তি শ্রবণ করিয়া কমঠমূৰ্ত্তি ধারণ করিলেন। তখন তিনি পৃষ্ঠদেশে মন্দরগিরি গ্রহণ পূর্বক সাগরশায়ী হইলেন এবং দেবগণের মধ্যে থাকিয়া পর্বর্বতশিখর আক্রমণ করত মন্থন করিতে • লাগিলেন। ২৭-৩১ ২ । শঙ্কর পূৰ্ব্বে দেবগণের সাহায্যাৰ্থ অমৃতমন্থনস্থলে উপস্থিত ছিলেন, পরে দেবগণের প্রার্থনায় বিষপান করিয়া অমৃতকুণ্ডে গমন করিয়াছিলেন । لاط\ ক্রমে সহস্ৰ বৎসর অতীত হইল, তদনন্তর কমণ্ডলুহস্তে ধন্বন্তরি ও সুন্দরী অপরাগণ সমুদ্র হইতে সমুথিত হইল। মস্তনসময়ে ক্ষীর-সারস্বরূপ রস হইতে উৎপত্তি বলিয়া উহারা অপসর নামে পরিচিত । উহাদের সংখ্যা ষাট কোটি, কিন্তু উহাদের পরিচারিকাদিগের সংখ্যা নাই। সমুদ্র হইতে উদ্ভূত হইলে অপসরাদিগকে কেহই গ্রহণ করে নাই বলিয়া উহারা সাধারণ-স্ত্রী বলিয়াই গণ্য হইল । তদনন্তর বরুণকন্যা সুরারূপিণী বারুণীর উৎপত্তি হইল, উত্থিত হইয়া.উহা গ্রহীতাকে অনুসন্ধান করিতে লাগিল । দিতিপুত্ৰগণ বারুণীকে গ্রহণ করিল না বটে, কিন্তু সে অদিতির পুত্রদিগের নিকট অনাদৃত হয় নাই। সুরার অপ্রতিগ্রহে দৈত্যগণ অস্থর ও প্রতিগ্রহে দেবগণ সুর নামে পরিচিত । ৩২-৩৮ ক্রমে সমূদ্র হইতে উচ্চৈঃশ্রবা অশ্ব, কৌস্তুভ-মণি এবং অবশেষে অমৃতের উৎপত্তি হইল। অমৃত লইয়াই স্বরাস্বরে বিরোধ। উভয় পক্ষে ঘোরতর সংগ্রাম চলিল, তখন আপনাদের বলক্ষয় দেখিয়া অস্থরগণ নিশাচরদিগের সহিত মিলিত হইল। সে সময়ে সৰ্ব্বলোকবিস্ময়কর তুমুল সংগ্রাম উপস্থিত ; যখন অস্থর-সৈন্য ক্ষীণ হইয় উঠে, তখন বিষ্ণু, মায়ার ছলনায় মোহিনী-মুৰ্ত্তি ধারণ করিয়া অমৃত হরণ করেন। সে সময়ে বিষ্ণুর প্রতিকূলে যে অস্থর দণ্ডায়মান হইল, তিনি তাহাকে বৈষ্ণবচক্রে চূর্ণ করিয়া ফেলিলেন । এইরপে দেবগণের হস্তে অগণ্য দানব বিদলিত হইল। অবশেষে পুরন্দর অস্বরদিগকে ংহার করিয়া আপনার রাজ্য অধিকার করিলেন, এবং প্রহৃষ্টমনে ঋষি ও চারণ-সমূহপরিপূর্ণ লোকসকলকে শাসন করিতে লাগিলেন । ৩৯-৪৫ ৩ । এই সর্গে বঙ্গদেশীয় ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলপ্রদেশীয় হস্তলিখিত পুস্তক সব লে ৩২শটি মাত্র মোক দেখা যায়—কদাচিৎ কোন পুস্তকে ৩৩টি । স্বপ্রসিদ্ধ টীকাকার গোবিন্দরাজও এই সর্গে ৩২টি শ্লেকেরই উল্লেখ করিয়াছেন, পরন্তু সকল টীকাকারগণই প্রক্ষিপ্ত ১৬টি মোকেরও