পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১১ ] ভক্ত্য রামস্য যে চেমাং সংহিতামুষিণী কুতাম । যে লিখন্তীহ চ নরাস্তেষাং বাসস্ত্রিপিষ্টপে । ইদমাখ্যানমায়ুষ্যং সৌভাগ্যং পাপনাশনম । রামায়ণং বেদসমং শ্রাদ্ধেযু শ্রাবয়েদবুধঃ ॥ অপুত্রে লভতে পুত্রমধনো লভতে ধনম্। সৰ্ব্বপাপৈ: প্রমুচ্যেত পাদমপ্যস্ত যঃ পঠেৎ । পাপাদ্যপি চ য: কুৰ্য্যাদহন্তহনি মানব: | পঠত্যেকমপি শ্লোকং স পাপাৎ পরিমুচ্যতে ॥ অশ্বমেধসহস্ৰস্ত বাজপেয়শত্তস্ত চ | লভতে শ্রবণাদেবাধ্যায়স্তৈকস্য মানবঃ ॥ হেমভারং কুরুক্ষেত্রে গ্রস্তে ভানেী প্রযচ্ছতি । যশ্চ রামায়ণং লোকে শৃণোতি সম এব সঃ। সম্যক শ্রদ্ধাসমাযুক্তে লভতে রাঘবীং কথাম । সর্বপাপাৎ প্রমুচ্যেত বিষ্ণুলোকং স গচ্ছতি ॥” তাৎপৰ্য্য—“পূর্বকালে মহর্ষি বাল্মীকি এই মহাকাব্য প্রণয়ন করিয়াছেন। ইহা ধৰ্ম্মোৎপাদক, আয়ুস্কর, যশস্কর এবং রাজগণের জয়দায়ক। যে ব্যক্তি রামায়ণ শ্রবণ করেন, তিনি পাপ হইতে মুক্ত হইয়া থাকেন, পুত্রার্থী ও ধনার্থী ব্যক্তি ইহা শ্রবণ করিয়া পুল্ল ও ধন লাভ করিয়া থাকেন। রামরাজ্যভিষেক-কথা শ্রবণ করিলে, রাজা পৃথিবী জয় এবং শক্র ক্ষয় করিতে পারেন । অক্লিষ্টকৰ্ম্ম৷ রামের বিজয়বাৰ্ত্তা শ্রবণ করিলে, লোকে দীর্ঘায়ু লাভ করিয়া থাকেন। যে ব্যক্তি ক্রোধ পরাজয় পূর্বক শ্রদ্ধার সহিত বাল্মীকিকৃত রামায়ণ শ্রবণ করেন, তিনি দুৰ্গমসমূহ হইতে উত্তীর্ণ হইয়া থাকেন । যিনি রামায়ণ শ্রবণ করেন, তিনি রামের নিকট হইতে সকল প্রকার প্রার্থিত বস্তু পাইয়া থাকেন । রামায়ণ শ্রবণে রাজা পৃথিবী জয় এবং প্রবাসী মঙ্গল লাভ করিয়া থাকেন। রজস্বল স্ত্রী ইহা শ্রবণ করিলে সুসন্তান প্রসব করেন। রামায়ণ পূজা বা পাঠ করিলে, লোকে সর্বপাপবিনিমুক্ত ও দীর্ঘায়ু হইয় থাকেন। যিনি সমগ্র রামায়ণ পঠন বা শ্রবণ করেন, ভগবান সনাতন রামচন্দ্র তাহার প্রতি প্রীত হইয়া থাকেন। যাহার ভক্তি পূর্বক ঋষিপ্রণীত এই সংহিতা লিখিয়া রাখেন, র্তাহীদের স্বৰ্গরাস হইয়া থাকে। এই উপাখ্যান আয়ুস্কর, সৌভাগ্যজনক এবং পাপ-প্ৰণাশক । শ্ৰাদ্ধকালে পশুিভমুখে বেদতুল্য এই রামায়ণ-গ্রন্থ শ্রবণ করিতে হয় । যে ব্যক্তি ইহার পাদমাত্র পাঠ করেন, তিনি অপুত্র থাকিলে পুত্রবান, নিধন থাকিলে ধনবান এবং পাপী থাকিলে পুণ্যবান হইয় থাকেন। যে ব্যক্তি প্রত্যহ পাপকাৰ্য্য করিয়া থাকে,ইহার একটিমাত্র শ্লোক পাঠ করিলে ও সে ব্যক্তির পাপ বিদূরিত হয়। অশ্বমেধ বা বাজপেয় যজ্ঞানুষ্ঠানে যে ফল পাওয়া যায়, রামায়ণের একটিমাত্র অধ্যায় শ্রবণে সেই ফললাভ হইয়া থাকে। গ্রহণকালে কুরুক্ষেত্রে স্বর্ণভার দান করিলে যে পুণ্য অর্জিত হয়, রামায়ণশ্রবণ তাহার তুল্য যে ব্যক্তি শ্রদ্ধার সহিত রামকথা শ্রবণ করেন, তিনি সৰ্ব্বপাপ-মুক্ত হইয়া বিষ্ণুলোকে গমন করিয়া থাকেন।” এক্ষণে রামায়ণ-প্রণেতা মহর্মি বাল্মীকি-সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ বলিবার প্রয়োজন । আলঙ্কারিকেরা বলেন যে, উপমান ও উপমেয় পদার্থের মধ্যে নিকৃষ্ট বস্তুর উৎকুস্টের সহিত তুলনা হইতে পারে, এবং তাঁহাই গৌরবের পরিচয় ; কিন্তু তা বলিয়া, উৎকৃষ্ট বস্তু নিকুষ্টের সহিত সাদৃশ্যে সংষোজিত হইতে পারে না এবং হওয়াও অলঙ্কার-দোষড়ষ্ট বলিয়া গণ্য । তিন্তিড়ী স্বভাবতঃ আমরস-পূর্ণ ; কিন্তু ইহার গুণ বর্ণন করিতে হইলে, শর্করার সহিত সাদৃশ্য হইতে পারে, ইহা স্বীকার্ঘ্য ; কিন্তু তা বলিয়া শর্কর তিন্তিড়ী-তুলা, এরূপ উপমা সুসঙ্গত নহে। আমরা যত দূর অনুসন্ধান ও অনুশীলন করিয়া জানিলাম, তস্থাতে রামায়ণের সহিত তুলনা হইতে পারে, এমন গ্রন্থ আমাদের নেত্রে এ পর্য্যন্ত প্রতিফলিত হয় নাই এবং হুইবে বলিয়াও বিশ্বাস করি না । আমরা এ সম্বন্ধে এই বলিয়াই সমাপ্ত করিতে পারি যে, কবি