পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 و \ রাজকুমারকে দেবতুল্য পরাক্রান্ত, গজ ও সিংহের স্বায় গতিবিশিষ্ট ও শাৰ্দ্দ লবৃষভাকার দেখিতেছি। হঁহাদের চক্ষু পদ্মপলাশবং, করে ধনুৰ্ব্বাণ ও খড়গ, দেখিতে অশ্বিনীকুমারের স্যায় রূপবান। আমার বোধ হইতেছে, যেন দেবলোক হইতে দুইটি দেবতা অবনীতে অবতীর্ণ হইয়াছেন। ইহারা কি জন্য পদব্রজে গমন করিতেছেন ? দিবাকর ও নিশাকর যেরূপ অন্তরীক্ষকে সুশোভিত করেন, তাহার স্যায় ইহার এই স্থানকে অলঙ্কত করিয়াছেন। ইহাদের আকার, ইঙ্গিত ও চেষ্টা একই প্রকার দেখিতেছি । তাহার কথাক্রমে মহর্ষি বিশ্বামিত্র রামলক্ষণের আনুপূর্বিবক পরিচয় প্রদান করিলেন। বিশ্বামিত্রের বাক্য শ্রবণ করিয়া নৃপতি সাতিশয় বিস্মিত হইলেন। তখন দশরথের পুত্রদ্বয়কে অতিথিভাবে সমাগত জানিয়া নৃপতি সুমতি র্তাহাদের সমুচিত সৎকার করিলেন। সুমতির সংকার লাভ করিয়া তাহারা সে রাত্রি সেখানে অবস্থান পূর্বক পরদিন মিথিলাভিমুখে গমন করিলেন। ১-৯ সেখানে উপস্থিত হইবামাত্র মিথিলাপুরীর অনুপম শোভা-দর্শনে মহর্ষিগণ অতিশয় সাধুবাদ প্রদান করিলেন । এই সময়ে রামচন্দ্র তত্ৰত্য উপবনে নির্জন মনোরম তপস্যার স্থান দেখিয়া মহর্ষিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, হে মুনে ! এ স্থান আশ্রমতুল্য দেখিতেছি, কিন্তু এখানে মুনিগণ নাই কেন ? ইহ পূর্বে কাহার আশ্রম ছিল, তাহা জানিতে ইচ্ছা করি। ( ...” বাগ্মী মহাতেজ বিশ্বামিত্র, রাঘবের বাক্য শ্রবণ করিয়া বলিতে লাগিলেন, হে রামচন্দ্র । যে মহাত্মার কোপপ্রযুক্ত আশ্রমের এ অবস্থা ঘটিয়াছে, আমি তাহ বলিতেছি, শ্রবণ কর । ১০-১৩ এই স্থানে দেববাঞ্ছিত মহাত্মা গৌতমের আশ্রম ছিল, তখন ইহার সৌন্দর্ঘ্যের সীমা ছিল না। তিনি এখানে অনেক দিন পর্যন্ত অহল্যার সহিত তপস্যা করিয়াছিলেন। এক দিন স্বযোগ পাইয়া স্বররাজ বাল্মীকি-রামায়ণ ইন্দ্র গৌতম-বেশ ধারণপূর্বক অহল্যাকে এই কথ। কহিলেন, হে মুন্দরি । রতিপ্রার্থী জন ঋতুকালের ৈ প্রতীক্ষা করে না, অতএব হে সুমধ্যমে ! তোমার সঙ্গলাভ করিতে ইচ্ছা করি। হে রাম! দুৰ্ব্ব ব্ধি অহল্যা স্বামিবেশধারী শক্রকে জানিতে পারিয়াও তাহার সহিত সহবাসে প্রবৃত্ত হইলেন। অনন্তর প্রহৃষ্টমনে শচীপতিকে কহিলেন, আমি কৃতাৰ্থ হইয়াছি, অতএব তুমি অবিলম্বে এখান হইতে চলিয়া যাও। হে দেবরাজ ! তুমি আপনাকে এবং আমাকে গৌতমের শাপ হইতে রক্ষা কর। তখন সহাস্তবদনে সুরেন্দ্র কহিলেন, হে নিতস্বিনি ! আমি পরম পরিতুষ্ট হইয়াছি, এক্ষণে আমি দেবলোকে প্রস্থান করিলাম। এই কথা কহিয়া তিনি মহর্ষির আশ্রম হইতে নিৰ্গত হইলেন। ১৪-২২ তিনি যদিও সৰ্ভয়ে ত্বরিতগমনে গৌতম-ভয়ে প্রস্থান করিতেছিলেন, কিন্তু আশ্রম-পরিত্যাগকালে ঋষিকে আশ্রমে প্রবেশ করিতে দেখিলেন । তেজঃপ্রভাবে দেবদানবের দুরতিক্রমণীয়, তপোবলসম্পন্ন, মহর্ষি গৌতম তীর্থ-জলার্দগাত্রে প্রদীপ্ত বহ্নির স্যায় সমিধকুশহস্তে আশ্রমে প্রবেশ করিতেছেন। র্তাহাকে দর্শন করিয়াই দেবরাজ ভয়ে ভীত ও বিষণ্ণবদন হইয়া গেলেন। সদাচারপরায়ণ মুনি, অসদাচারী ইন্দ্রকে নিজবেশ ধারণ করিয়া আশ্রম হইতে নিষ্ক্রান্ত হইতেছেন দেখিয়া সক্রোধে কছিলেন, রে দুৰ্ম্মতে । তুই যখন আমার মুক্তি ধারণ করিয়া অকৰ্ত্তব্য কার্য্য—আমার ভাৰ্য্যা হরণ করিয়াছিস, অতএব আমার শাপে তোর বৃষণ স্মলিত হইয়া ভূতলে নিপতিত হইবে। গৌতম ক্রোধভরে এই কথা বলিবামাত্র বাসবের বৃষণদ্বয় ভূতলে খসিয়া পড়িল। তদনন্তর অহল্যাকে কহিলেন, রে দুরাচারিণি ! তোকে এই আশ্রমে অনেক কাল পর্য্যন্ত অবস্থিতি ২। শাস্ত্ৰে ঋতুকাল ১৬শ রাত্রি নির্দেশ করিয়াছেন, “ৰোড়শপ্ত,নিশ। খ্ৰীণামূ” ইতি।