পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سbو\ কুশেরই সন্তান। কুশনাভের পুত্র গাধি, মহামুনি বিশ্বামিত্র গাধির বংশধর । ইনি বহুসহস্ৰ বৎসর পৰ্য্যন্ত পৃথিবী পালন করিয়াছিলেন। কোন সময়ে এই নৃপতি এক অক্ষৌহিণী-পরিমিত সেনা সঙ্গে লইয়া এই পৃথিবী পরিভ্রমণ করেন। ইনি যথাক্রমে অনেক রাষ্ট্র, নদী ও পর্বত প্রভৃতি পৰ্যটন করিয়া বশিষ্ঠদেবের আশ্রমে উপনীত হন। ইনি ঐখানে গিয়া দেখিলেন, আশ্রম নানা প্রকার লতা, পুষ্প ও পাদপসমূহে বিশোভিত ; অসংখ্য প্রশান্ত মৃগ তথায় নিয়ত বিচরণ করিতেছে। দেব, দানব ও গন্ধৰ্বে ঐ স্থান পরিব্যাপ্ত, স্থানে স্থানে ব্রাহ্মণগণ শোভা পাইতেছেন। অগ্নিতুল্য তেজস্বী সিদ্ধ, মহর্ষি, দেবধিগণ ঐ স্থানে বসতি করিয়া থাকেন। তপশ্চরণসিদ্ধ অগ্নিকল্প ব্ৰহ্মকল্প মহাত্মগণে পরিপূর্ণ—ঐ স্থানে কত শত শত ঋষিগণ নিরাহারে কিম্বা শীর্ণ পর্ণানিলাহারে জপ-হোমপরায়ণ, কত শত বালখিল্য বৈখানসগণ আশ্রমের চতুর্দিকে শোভা বিস্তার করিতেছেন, বশিষ্ঠের এইরূপ দ্বিতীয় ব্রহ্মলোকের ন্যায় আশ্রম সন্দর্শন করিয়া নৃপতি বিশ্বামিত্র পরম প্রীতিলাভ করিলেন । ১৭-২৮ দ্বিপঞ্চাশৎ সর্গ মহাবল বিশ্বামিত্র, তপস্বিশ্রেষ্ঠ বশিষ্ঠদেবকে সন্দশন করিয়া বিনয়সহকারে তাহাকে প্রণাম করিলেন ও পরম প্রীত হইলেন। তখন মুনিবর বশিষ্ঠ তাহাকে স্বাগত প্রশ্ন করিয়া বসিবার জন্য আসন প্রদান করিলেন F বিশ্বামিত্র উপবেশন করিলে তিনি যথাবিধি ফলমূল প্রদান দ্বারা তাহার আতিথ্যবিধান করিলেন । আতিথ্যগ্রহণের পর বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠদেবকে অগ্নিহোত্র, শিন্য এবং আশ্রমস্থ বৃক্ষদিগের কুশল জিজ্ঞাসা করিলেন ; মুনিও সৰ্ব্বাঙ্গীন কুশল তাহাকে জানাইলেন। তখন মহাতপা বশিষ্ঠ, মুখোপবিষ্ট নৃপতিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, হে রাজন। তোমার বাল্মীকি-রামায়ণ মঙ্গল ত ? তুমি রাজার কৰ্ত্তব্যমত ধৰ্ম্মানুসারে প্রজা পালন করিতেছত ? তোমার ভৃত্যগণ বেতনাদি গ্রহণে তোমার বাধ্য আছে ত ? তোমার বিপক্ষদল দলিত হইয়াছে ত ? তোমার বল, কোষ ও বন্ধুবান্ধব সকলের ত কোনও আপদ নাই ? তোমার পুত্র-পৌত্রাদি সন্তান-সন্ততির ত কোনও অসুখ নাই ? মহাতেজ বিশ্বামিত্র সমস্তই মঙ্গল বলিয়া ঋষিকে সবিনয়ে নিবেদন করিলেন । তদনন্তর বহুবিধ কথা-প্রসঙ্গে বহুক্ষণ অতিবাহিত করিয়া পরম্পরে প্রীতি ও প্রসন্নতা লাভ করিলেন। এই অবসরে বশিষ্ঠদেব হাসিতে হাসিতে বিশ্বামিত্রকে কহিলেন, হে মহাবল ! আমি তোমার ও তোমার সৈন্যসমূহের আতিথ্যবিধান করিতে চাই ; তুমি আমার প্রস্তাবে সম্মত হও । তুমি অতিথিপ্রবর এবং সর্বাংশে পূজ্য, অতএব আমার সদভিপ্রায়ে সম্মতি প্রদান কর। বশিষ্ঠ কর্তৃক এইরূপ অভিহিত হইয়া তখন বিশ্বামিত্র কহিলেন, আপনার অভিলাষ সম্পাদিত হইয়াছে বলিয়া জানিবেন। হে ভগবন! আপনার আশ্রমে ফল, মূল ও পাদ্যাদি প্রদান—বিশেষতঃ, আপনার সন্দর্শনেই আমি পরমাপ্যায়িত হইয়াছি। হে মহাপ্রাজ্ঞ | আপনি আমার পূজ্য ব্যক্তি, আমাকে যেরূপ সমাদর করিতে হয়, আপনি তাহার ক্রটি করেন নাই ; এক্ষণে আপনাকে নমস্কার ; প্রার্থনা, আমার প্রতি মেহদৃষ্টি রাথিবেন। এরূপ অনুনয় করিলেও মুনিবর বারংবার র্তাহাকে আতিথ্যগ্রহণে অনুরোধ করিলেন। তখন বিশ্বামিত্র স্বীকার করিলেন ও বলিলেন, ভগবন ! আপনার যাহা অভিপ্রেত, তাহাই হউক। এই সময়ে বশিষ্ঠদেব বিচিত্রবর্ণে বিভূষিতা, বিধৃতপঙ্কা হোমধেনুকে এই বলিয়া আহবান করিলেন, হে শবলে ! তুমি শীঘ্ৰ আগমন কর ও আমার বাক্য শ্রবণ কর, আমি সসৈন্য রাজার আতিথ্যবিধান করিতে উষ্ঠত হইয়াছি, তুমি উৎকৃষ্ট ভোজন প্রদান কর। ছয় রসের মধ্যে র্যাহার যেমন অভিরুচি, তুমি তাহাকে