পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰালকাও সেইরূপ আহার্য্য আমার সন্তোষের নিমিত্ত অপর্ণ কর। হে শবলে ! তুমি আমার অনুরোধে লেহ, পেয় ও অন্নাদি প্রস্তুত করিতে ত্বরান্বিত হওঁ । ১-২৩ ত্ৰিপঞ্চশৎ সর্গ অনন্তর বশিষ্ঠের আদেশক্রমে কামধেনু শবলী যাহার যেরূপ বাসনা, তদনুরূপ নানাবিধ দ্রব্য স্থ৪ি করিয়া ফেলিল। সে ইক্ষু, লাজ, মৈরেয় মদ্য, মহামূল্য পানীয়, অনেক প্রকার পিস্টকাদি খাদ্যদ্রব্য, পৰ্ব্বত তুল্য উষ্ণ অন্নরাশি, পায়স, সুপ, দধিকুল, নানাবিধ সুস্বাদু-খাদ্য-পূর্ণ রৌপ্যপাত্র ইচ্ছাক্রমে স্বষ্টি করিল। তখন বিশ্বামিত্রের সৈন্যসকল সস্তুষ্ট হইয়াছিল। হে রাম ! বণিষ্ঠ এইরূপে তাহাদিগকে সম্বুস্ট করিলেন। নৃপতি বিশ্বামিত্র ব্রাহ্মণ, পুরোহিত ও অমাতদিগের সহিত ঋষির আতিথ্যে সস্তুষ্ট হইলেন। তখন তিনি অমাত, ভূত্য ও অনুচরগণের সহিত পরিতৃপ্ত হষ্টয়া ঋষিকে বলিলেন, হে মুনে ! আপনার অনুকম্পায় যেরূপ আতিথ সম্ভব, তাহার ক্রটি হয় নাই, এক্ষণে আমার একটি নিবেদন শ্রবণ করুন। আমি আপনাকে লক্ষ গোধন প্রদান করিতেছি, আপনি তদ্বিনিময়ে আমাকে শবলা দান করুন ; এই ধেনু রত্নবিশেষ জানিবেন, রত্ন-ভোগে রাজারই অধিকার । অতএব আমাকে শবলা দান করুন, ন্যায়ানুসারে ইহাতে আমারই অধিকার। ১-১০ তখন বশিষ্ঠদেব বিশ্বামিত্রকে কহিলেন, শত সহস্র বা কোটি ধেনু দান করিলেও আমি উহা দান করিতে পারি না। অন্য কথা কি, রাণীকৃত রৌপ্য পাইলেও ইহা অামার নিকট হইতে অন্যের হস্তগত হইতে পারে না। এই ধেনু মনস্কিগণের কীৰ্ত্তির স্বায় সর্বতোভাবে রক্ষণীয়, বিশেষতঃ ইহা দ্বারা হবা, কব্য ও আমার প্রাণযাত্রা নির্ববাহিত হয় । ইহা দ্বারা অগ্নিহোত্র, হাম ও বলিকার্য্য \9ఏ সংসাধিত হয়, অধিক কি, স্বাহ ও বষটুকারসাধ্য বহুবিধ যজ্ঞ ও বিদ্যা সকল ইহারই অধীন। হে রাজন ! এই শবলাই আমার সর্বস্ব, ইহাতে আমার যেরূপ প্রীতি, এরূপ প্রীতিকর বস্তু আর দেখিতে পাই না । আমি এই সকল কারণে ইহাকে তোমার কাৰ্য্যে প্রদান করিতে পারিতেছি না। তখন বিশ্বামিত্র তদ্বাকে, প্রত্যুত্তর দিলেন, আমি আপনাকে স্বর্ণশৃঙ্খলবদ্ধ গ্রৈবেয়কমণ্ডিত স্নবর্ণকুকুমভূষিত চতুর্দশ সহস্র হস্তী প্রদান করিতেছি। এতদ্ব্যতীত শ্বেতাশ্বযুক্ত ,অষ্ট শত স্বর্ণ-রথ, এক সহস্ৰ দশটি উৎকৃষ্ট অশ্ব, নানাবর্ণময় কোটি ধেনু প্রদান কবিতেছি, আমাকে শবলা দান করুন। যদি এতদ্ব্যতীত রত্নরাজি ও হিরণ্যাদি আপনার অভিপ্রেত হয়, আমি তাহাও দিতে প্রস্তুত আছি। বিশ্বামিত্র এই কথা কহিলে মহর্ষি বশিষ্ঠ, “হে রাজন্‌ ! আমি কখনই শবলী প্রদান করিব না?--এই কথা নৃপতিকে কহিলেন । আরও বলিলেন, এই ধেমুই আমার ধন, ইহাই রত্ন, ইহাই সৰ্ব্বস্ব, এমন কি, এই ধেনুই আমার জীবন। আমি ইহারই সাহায্যে দর্শ ও পৌর্ণমাস যজ্ঞ এবং অন্যান্য দৈবক্রিয়া সাধন করিয়া থাকি। এই গোধনই আমার সকল সংক্রিয়ার মূল, অধিক কি বলিব, আমি কোনও মতে এই কামধেনু শবলাকে দিতে পারিব না। ১১-২৫ 劍 চতুঃপঞ্চাশৎ সর্গ যখন বশিষ্ঠদেব কোনও মতে হোম-ধেনু প্রদান করিলেন না, তখন নৃপতি বিশ্বামিত্র উহাকে বলপূর্বক লইয়া গেলেন, লইয়া যাইবার সময় ধেমুর নয়নজল নিপতিত হইতে লাগিল, সে দুঃখিতমনে চিন্তা করিতে লাগিল, আমাকে কি মহর্ষি প্রকৃতই পরিত্যাগ করিলেন ? রাজপুরুষেরা আমাকে এরূপ কষ্ট দিয়া লইয়া যাইতেছে কেন ? আমি ধাৰ্ম্মিক সেই মহর্ষির এমন কোনও অপকার করি নাই, যে জন্য ভক্ত