পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালকাগু ভস্মীভূত করিলেন। স্বকীয় সৈন্য-সংহার দর্শনে নৃপতি বিশ্বামিত্র সলজ্জভাবে কিয়ৎকাল চিন্তা করিতে লাগিলেন। তখন তাহার অবস্থা তরঙ্গশূন্য সমুদ্রের মত, ভগ্নদন্ত সপের ন্যায় ও রাহুগ্রস্ত দিবাকরের ন্যায় বোধ হইতে লাগিল। তিনি সৈন্যগণ-সহিত সন্তানগণকে নিহত দেখিয়া ছিন্নপক্ষ পক্ষীর স্যায় নিরুৎসাহমনে নিবে দ? প্রাপ্ত হইলেন। অনন্তর ক্ষত্রিয়ধৰ্ম্মানুসারে তুমি পৃথিবী পালন কর, এই বলিয়া তিনি একটি পুত্রের প্রতি রাজ্যভার সমর্পণ পূর্বক বন-প্রবেশ করিলেন। ১-১১ বিশ্বামিত্র হিমালয়ের পাশ্বদেশে কিন্নরাদিসেবিত স্থানে গমন করিয়া মহাদেবের আরাধনার্থ তপস্যা করিতে লাগিলেন। কিছুকাল অতীত হইলে, দেবদেব বৃষধ্বজ তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন। তখন তিনি র্তাহাকে কহিলেন, হে রাজন ! তোমার তপস্যা করিবার কারণ কি ? তোমার যাহা অভিপ্রায়, আমার নিকটে সেই বর প্রার্থনা কর। মহাদেব এই কথা কহিলে, মহর্ষি বিশ্বামিত্র তদীয় পাদমূলে প্ৰণিপাত পূর্বক কহিলেন, হে পিনাকপাণে! যদি আপনি প্রসন্ন হইয়া থাকেন, তাহা হইলে সাঙ্গোপাঙ্গ মন্ত্রের সহিত রহস্যযুক্ত ধনুৰ্বেদ আমাকে প্রদান করুন। দেব দানব, মহর্ষি, যক্ষ, রাক্ষস ও গন্ধৰ্বলোকে যে সকল অস্ত্র আছে, অামাতে তাহ প্রতিভাত হউক। আপনার অনুগ্রহে আমার অভিলাষ পূর্ণ হউক, এই আমার প্রার্থনা । তদ্বাক্যে তথাস্তু বলিয়া নীলকণ্ঠ অন্তহিত হইলেন। দেবাদিদেবের নিকট হইতে অস্ত্রলাভ করিয়া বিশ্বামিত্র অতিশয় দৃপ্ত হইয়া উঠিলেন। তখন পর্বদিনে সমুদ্রের ন্যায় তিনি বীৰ্য্যপ্রভাবে বন্ধিত হইয়া উঠিলেন, তখন র্তাহার মনে হইল, এইবার বশিষ্ঠদেবের আর নিস্তার নাই। মনে মনে অবধারণ করিয়া তিনি পুনর্বার বশিষ্ঠের আশ্রমে প্রবেশ পূর্বক অস্ত্ৰজাল উন্মুক্ত করিলেন, তাহার ১ । সৰ্ব্বত্র নিষ্ফলতা দর্শনে চিত্তের অবসাদ । O 이 অস্ত্রে তপোবন নিৰ্দ্দগ্ধপ্রায় হইল। তখন তদর্শনে আশ্রমবাসী ঋষিগণ সন্ত্রস্তমনে চতুৰ্দ্দিকে পলায়ন করিতে লাগিলেন। বশিষ্ঠের শিষ্যগণ এবং আশ্রমস্থ মৃগপক্ষিগণ পর্যন্ত ভয়ভীত হইয়৷ নানা দিকে প্রধাবিত হইল। এইরূপে ঐ আশ্রম শূন্যপ্রায় হইয়া মুহূৰ্ত্তকাল নীরব বন-প্রদেশের স্যায় শোভা পাইতে লাগিল । তখন বশিষ্ঠদেব কহিতে লাগিলেন, তোমরা ভত হইও না, ভাস্করোদয়ে যেরূপ নীহার-নিপাত ঘটে, তাহার ন্যায় আমি গাপিপুলের প্রাণ বিনষ্ট করিব। এই কথা বলিয়া সরোষে বিশ্বামিত্রকে বলিলেন, রে নির্বোপ ! তুই যখন সুখকর চিরসমৃদ্ধ এই আশ্রমের উচ্ছেদসাধন করিলি, তখন আর তোকে জীবিত থাকিতে হইবে না। এই কথা বলিয়া বিধূম অনলের ন্যায় ক্রোধে প্রদীপ্ত হইয়া যমদণ্ডসদৃশ ব্ৰহ্মদণ্ড উত্তোলন পূর্বক ত্বরিতগমনে র্তাহার প্রতি ধাবিত হইলেন। ১২-২৮ ষট পঞ্চাশৎ সর্গ বশিষ্ঠদেব এই কথা কহিলে, “তিষ্ঠ তিষ্ঠ” এইরূপ কহিয়া বিশ্বামিত্র আগ্নেয়াস্ত্র পরিত্যাগ করিলেন। তখন বশিষ্ঠ অপর কালদণ্ডের ন্যায় ব্রহ্মদণ্ড উত্তোলন করিয়া সরোষে এই কথা বলিলেন, রে ক্ষত্রিয়কুলাঙ্গার । এই আমি দাড়াইলাম, তোর যত দূর সাধ, নিজ শক্তি প্রকাশ কর ; রে গাধিস্থত! আমি তোর অস্ত্রের দপ চূৰ্ণ করিব। রে ক্ষত্ৰিয়-অধম! ব্রহ্ম-বলের সহিত ক্ষত্রিয়বলের তুলনাই হয় না। যাহা হউক,আমার সেই অতুল বল এখনি প্রত্যক্ষ করিবি । এই কথা বলিবার পর জলে জ্বলন্ত অনলের অবস্থা যেরূপ হয়, তাহার স্যায় ব্ৰহ্মদণ্ডপ্রভাবে বিশ্বামিত্রের আগ্নেয়াস্ত্র নিবারণ করিলেন। তখন কৌশিক কুপিত হইয়া বারুণ, ঐন্দ্র,পশুপত, ঐশিক, মানব, মোহন, গান্ধৰ্ব, স্বাপন, জস্তণ, সন্তাপন, শোষণ, বজ, ব্রহ্মপাশ, কালপাশ, বারুণপাশ,