পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> e N2 কিছুকাল বান্ধবদিগের সহিত নানা-কথা-প্রসঙ্গে কালাতিপাত করিয়া তাহদেরই কথাক্রমে বাসভবনে প্রবেশ করিলেন । সেখানে নর-নারীগণ আমোদে উন্মত্তপ্রায় হইয়া প্রফুল্লকমলবিশিষ্ট মত্ত বিহঙ্গশোভিত সরোবরের ন্যায় শোভা ধারণ করিল। মহর্ষি বশিষ্ঠ রাজভবন-তুল্য রামভবন হইতে নির্গত হইয়া দেখিলেন, রাজপথ লোকারণ্য। রাজপথে অসংখ্য লোক দলবদ্ধ হইয়া চলিতেছে। এমনই জনতা যে, পথ পর্যন্ত দৃষ্ট হইতেছে না। নিয়ত লোকের সংঘৰ্ম ও হর্ষাতিশয্যে রাজপথ সমুদ্র-কলরবের ন্যায় তুমুল শব্দে পরিপূর্ণ। ঐ দিবসই অযোধ্যার সকল পথ পরিচ্ছন্ন ও জলসিক্ত, নগরীর তোরণ সকল বিচিত্র মাল্যে অলঙ্কত, প্রায় সমস্ত গৃহই ধ্বজদণ্ডে বিশোভিত হইয়াছিল। নগরের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই উৎসবে উন্মত্ত এবং অভিষেক দর্শনের নিমিত্ত সুৰ্য্যো দয়ের অপেক্ষায় অবস্থিত ছিল। অধিক কি, প্রকৃতিপুঞ্জের শ্ৰীবৃদ্ধির নিদানভূত হৰ্ণবিবৰ্দ্ধন এই মহোৎসবের জন্য সকলেই সমূৎসুক হইল। ৯-২০ রাজপুরোহিত বশিষ্ঠ এই প্রকার জনস্রোত দেখিতে দেখিতে ঐ জনতাকে এক একটি দলে বুহিত করিয়াই যেন মুদ্রগমনে রাজভবনে প্রবেশ করিলেন। ঐ রাজমন্দির হিমগিরির শিখরতুল্য। বৃহস্পতি যেরূপ স্বরপতির নিকটে বিরাজমান থাকেন, তাহার স্যায় তিনি নরেন্দ্রের সন্নিধানে শোভা পাইতে লাগিলেন। মুনিবর উপস্থিত হইবামাত্র নৃপবর সিংহাসন হইতে গাত্রেখানু করিলেন এবং অভিমত কাৰ্য্য সম্পাদিত হইয়াছে জানিয়া কৃতকৃতাৰ্থ হইলেন। তখন সভাস্থ সকলেই আপন আপন আসন হইতে উখিত হইয়া, পুরোহিতের সম্মাননা করিলেন। তদনন্তর নরনাথ গুরুর আদেশক্রমে কেশরী যেরূপ গিরিগুহাকে আশ্রয় করে, তাহার স্থায় সভামণ্ডপ পরিত্যাগ-পূর্বক অন্তঃপুরে প্রবেশ করিলেন। তারাপতি যেরূপ তারক-বেষ্টিত নভঃপ্রদেশকে স্বশোভিত করে, তাহার বাল্মীকি-রামায়ণ & স্যায় নৃপতি দশরথ প্রমদাপরিপূর্ণ अमबावडीझ्ना অন্তঃপুরকে যার-পর-নাই শোভিত করিলেন। ২১-২৬ ষষ্ঠ সর্গ পুরোহিত প্রস্থান করিলে পর, রামচন্দ্র কৃতমান হইয়া বিশালনয়না জানকীর সহিত একাগ্রচিত্তে নারায়ণের আরাধনা করিতে লাগিলেন। তিনি দেবদেব ভগবানকে নমস্কার করিয়া হবিঃপাত্র ধারণ পূর্বক সেই মহাদেবতার উদ্দেশে প্রদীপ্তানলে আহুতি প্রদান করিলেন। তদনন্তর হোমশেষ ভক্ষণ পূর্বক নারায়ণ-সন্নিধানে আপনার মঙ্গল প্রার্থনা করিয়া, ধ্যানপরায়ণ ও মৌন হইয়া কুশশয্যায় সীতার সহিত শয়ন করিলেন। তিনি এক প্রহর রাত্রি অবশিষ্ট থাকিতে শয্যা পরিত্যাগ করিলেন এবং অধীনস্থ লোকদিগের দ্বারা গৃহের সাজসজ্জা সম্যকরূপে করাইয়াছিলেন। এই সময়ে সুত, মাগধ ও বন্দিগণের মুখে মধুর মঙ্গল-গীত শ্রবণ করিতে করিতে প্রাতসন্ধ্যোপাসনা করিয়া জপ করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। তিনি প্রণত হইয়া, মধুসুদনকে স্তবস্তুতি করিয়া পট্টবস্ত্র পরিধান করিলে, ব্রাহ্মণগণ র্তাহার স্বস্তিবাচন করিলেন। র্তাহাদের পবিত্র পুণ্যাহশব্দ তুৰ্য্যের সহিত সম্মিলিত হইয়া অযোধ্যা প্রতিধ্বনিত করিয়া তুলিল । সীতাপতি সীতার সহিত উপবাসী আছেন, এই সংবাদে সকল লোকই সস্তুষ্ট হইল। ১-৯ তদনন্তর পৌরগণ রামাভিষেক শ্রবণ করিয়া ও রাত্রি প্রভাত হইয়াছে জানিয়া, পুরী সুশোভিত করিতে লাগিল। শুভ্র মেঘবৎ দেবগৃহ, চতুষ্পৰ, রখ্য, অট্টালিকা, চৈত্য, পণ্য-পরিপূর্ণ বিপণি, সুসমৃদ্ধ লোকালয়, সভা ও অত্যুন্নত বৃক্ষে পতাকা সকল স্থাপিত হইতে লাগিল। নট, নৰ্ত্তক ও গায়কদিগের সঙ্গীতলাপে চতুৰ্দ্দিক মুখরিত হইয়া উঠিল। সকলের মুখে রামরাজ্যাভিষেক-কথা ঘোষিত হইতে