পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অযোধ্যাকাণ্ড SSX রাজ্যপ্রাপ্তি না হয়, কি উপায়ে কাৰ্য সাধিত হইতে নৃপতিও তথাস্তু বলিয়া তোমার বাক্যে সন্মতি প্রদর্শন পারে, তুমি তাহা বিবেচনা কর। পাপদর্শিনী মন্থর এই কথা শ্রবণ করিয়া রামের রাজ্যাভিষেকের ব্যাঘাত দিবার জন্য এই কথা বলিল, হে কৈকেয়ি ! তুমি আমার শক্তি দর্শন কর। যেরূপে তোমার পুত্র রাজ্যলাভ করিবে, আমি তদুপায় নির্দেশ করিতেছি, শ্রবণ কর ;–তুমি আমার নিকটে যে কথা বারংবার বলিয়াছ, তাহা কি তোমার স্মরণ নাই ? তাহা কি আমার মুখে শুনিবার জন্য গোপন করিতেছ? যদি এরূপ হয়, তবে আমার নিকট হইতে তাহ শ্রবণ কর এবং এপক্ষে যাহা বিহিত, তদনুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হও । মন্থরামুখে এরূপ উক্তি শ্রবণ করিয়া, রাজমহিষী বিস্তীর্ণ শয্যা হইতে কিঞ্চিৎ উথিত হইয়া এই কথা কহিলেন, হে মন্থরে । যাহাতে ভরতের রাজ্যলাভ হইবে, রামের হইবে না, এরূপ কি উপায় আছে, আমাকে বল ॥১-৯ তখন পাপমতি মন্থরা রামরাজ্যের ব্যাঘাত দিবার জন্য কৈকেয়ীকে কহিল, পূর্বকালে দেবাসুরে সংগ্রাম ঘটিলে, দেবরাজ ইন্দ্রের সাহায্য করিবার জন্য অন্যান্য রাজষিগণের সহিত তোমার স্বামী মহারাজ দশরথ তোমাকে লইয়া যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হইয়াছিলেন। দেবি । দক্ষিণদিকে দণ্ডকারণ্য নামক স্থানে বৈজয়ন্ত নামে একটি নগর আছে, তিমিধ্বজ উহার অধিপতি। এই অস্থর অতিশয় মায়াবী ও বলবান, ইহার অপর নাম শম্বর। ইহারই সহিত স্বরেন্দ্রের সংগ্রাম ঘটে। এই যুদ্ধে সৈন্যগণ কাতর হইয়া রাত্রিকালে নিদ্রিত থাকিলে, রাক্ষসগণ উপস্থিত হইয়া ইহাদিগকে নিহত করিত। এই সময়ে রাক্ষসদিগের বিরুদ্ধে মহারাজ তুমুল সংগ্রাম করিয়া ক্ষতবিক্ষত হইয় পড়েন। তুমি মহারাজকে মুচ্ছিত দেখিয়া, তাহাকে লইয়া গিয়া রক্ষা করিয়াছিলে। তিনি তোমার ব্যবহারে তুষ্ট হইয়া তোমাকে দুইটি বর দিতে প্রতিশ্রত হন, কিন্তু যখন ইচ্ছা হইবে গ্রহণ করিব বলিয়া তুমি তাহাকে বিজ্ঞাপিত কর। করেন। আমি এ বিষয়ের কিছুই জানিতাম না, . তোমার নিকট হইতে পূৰ্ব্বে শুনিয়াছি। আমি তোমাকে ভালবাসি বলিয়া তোমার এ কথা বিস্মৃত হই নাই। তুমি এক্ষণে মহারাজকে বলপূর্বক রামের রাজ্যাভিষেক হইতে নিবৃত্ত কর। সম্প্রতি মহারাজের নিকট হইতে দুইটি বর প্রার্থনা কর ; এক বরে ভরতের রাজ্যাভিষেক ও অন্য বরে রামচন্দ্রের চতুর্দশ বৎসর বনবাস তোমার প্রার্থনীয়। ১০-২০ রাম চতুর্দশবর্মকালের জন্য নির্বাসিত হইলে, প্রক্তাবর্গের চিত্ত ও ভালবাসা আয়ত্ত করিয়া ভরত রাজ্যে অটল হইতে পারবে। হে অশ্বপতিনন্দিনি! তুমি এক্ষণে মলিন বসন পরিধান-পূর্বক ক্রোধাগারে প্রবেশ করিয়া, ক্রোধ ভরে ভূমিশায়িনী হইয় অবস্থিতি কর। মহারাজ উপস্থিত হইলে, ভূমিশায়িনী তুমি তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত বা সস্তাষণ করিও না, কেবল রোদনপরায়ণ হইবে। তুমি যে মহারাজের প্রাণবল্লভ, সে বিষয়ে আমার কোনও সন্দেহ নাই ; আমি জানি, তোমার জন্য তিনি অনলে প্রবেশ করিতে পারেন। তিনি তোমার ক্ৰোধোৎপাদন করিতে বা তোমাকে ক্রুদ্ধ দেখিলে, তোমার প্রতিদৃষ্টিপাত করিতে সাহসী হইবেন না ; অধিক কি, তোমার প্রীতির নিমিত্ত তিনি প্রাণ পৰ্য্যন্ত বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। হে অলসস্বভাবে । নৃপতি তোমার কথা অতিক্রম করিতে সমর্থ নহেন। হে সুন্দরি । এক্ষণে তুমি আপনার সৌভাগ্যবল বুঝিয়া দেখ। মহারাজ তোমাকে মণি, মুক্ত, সুবর্ণ ও বিবিধ রত্বরাজি প্রদান করিতে চাহিবেন, কিন্তু তুমি কোন দ্রব্যের প্রতিই লক্ষ্য করিও না। মহারাজ দশরথ দেবাম্বরযুদ্ধসময়ে তোমাকে যে দুইটি বর দিয়াছিলেন, তাহা তাহাকে স্মরণ করাইয়। দিবে, দেখিও, রামের বনবাস ও ভরতের রাজ্যপ্রাপ্তির কথা ভুলিও না। যে সময় নরনাথ