পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অযোধ্যাকাও সদৃশ, উহার জ্যোতি চন্দ্রমুর্ঘ্যকিরণতুল্য ; উহার সৰ্ব্বত্রই পক্ষিকুলে সমাকুলিত। সুমন্ত্র মুমেরুপর্বতের শৃঙ্গ সদৃশ উন্নত রামগৃহ দেখিলেন। ঐ পুরীর দ্বারদেশে রামাভিষেক-প্রতীক্ষায় কৃতাঞ্জলিপুটে নানাদেশীয় লোক দণ্ডায়মান। অসংখ্য দাসদাসীতে ঐ প্রাসাদ সমাচ্ছন্ন এবং ইহার সর্বত্র নানাবিধ মহামূল্য রত্বে বিভূষিত ও কুজগণে সমাবৃত। তদনন্তর সুমন্ত্র রথ লইয়া জনতাপূর্ণ রাজপথ অলঙ্কত ও পৌরগণের অন্তঃকরণ পুলকিত করিয়াতন্মধ্যে প্রবিষ্ট হইলেন। ২৮-৪০ প্রাসাদে উপস্থিত হইবামাত্র সুমন্ত্রের শরীরে রোমাঞ্চের আবির্ভাব হইল। শচীপতির প্রাসাদ যে প্রকার, সেইরূপ রামভবন মৃগ ও ময়ূরে সুশোভিত। অনন্তর স্বমন্ত্র কৈলাসাচল তুল্য শোভাসম্পন্ন স্বৰ্গবং রমণীয় কয়েকটি প্রকোষ্ঠ অতিক্রম করিয়া রামের অধীনস্থ অসংখ্য ব্যক্তির সহিত সাক্ষাৎ করিলেন । সর্ববশেষে তিনি রামান্তঃপুরে প্রবিষ্ট হইলেন। সারথি সকলেরই মুখে রামাভিষেকের কথা শুনিতে পাইয়া অতিশয় আনন্দিত হইলেন । রামের বাসভবন সুরম্য ইন্দ্রধামতুল্য এবং মৃগপক্ষিসমাকীর্ণ ; উহা সুমেরুশিখরতুল্য উন্নত এবং স্বকীয় প্রভায় শোভাবিশিষ্ট। উহার দ্বারদেশে অসংখ্য মনুষ্য আপনাদের বাহনাদি পরিত্যাগ-পূর্বক নানাবিধ উপহার হস্তে কৃতপ্রলিপুটে অবস্থিত। তদনন্তর সুমন্ত্র মেঘবং শু্যামবর্ণ শৈলাকৃতি শত্রুঞ্জয় নামে মনোহর উন্নতকায় হস্তীকে-— যে রামকে বহন করিবে, তাহাকে দেখিয়াছিলেন। কোথাও বা রাজকুমারের অমাত্যগণ বিচিত্র বেশভূষায় বিভূষিত রহিয়াছেন, সেই সরথ-কুঞ্জর রাজপুত্রগণকে দেখিলেন । সেই সকলকে অতিক্রম করিয়া রত্নসঙ্কুল সমুদ্রগর্ভে মকর যেরূপ প্রবেশ করে, তাহার স্থায় স্বমন্ত্র অবারিতভাবে সুসমৃদ্ধ, মহাবিমানসদৃশ রামের অন্তঃপুরমধ্যে প্রবিষ্ট হইলেন। ৪১-৪৮ கறு wo * ১২৭ ষোড়শ সর্গ তদনন্তর বৃদ্ধ সারথি জনতাপূর্ণ অন্তঃপুরদ্বার অতিক্রম করিয়া কোলাহলশূন্ত রামচন্দ্রের প্রকোষ্ঠে উপনীত হইলেন। ঐ স্থান প্রাস-কান্মুকধারী,উজ্জ্বলকুণ্ডল-বিশোভিত, অপ্ৰমত্ত, একাগ্ৰ, যুবক, অনুরক্ত, বিশ্বস্ত বীর পুরুষেরা অস্ত্রশস্ত্র ধারণ পূর্বক রক্ষা করিতেছে। প্রকোষ্ঠের বহিদ্বারে কুমুস্তাদি রক্তবসন পরিধান করিয়া বেত্ৰহস্তে প্রাচীন সু-অলঙ্কত স্ত্রীজনীধ্যক্ষ অন্তঃপুররক্ষকগণকে স্বমন্ত্র দেখিতে পাইলেন। অকস্মাৎ সুমন্ত্রের শুভাগমন দেখিয়া তাহারা সসন্ত্রমে গাত্রোথান করিল। তখন স্থমন্ত্র তাহাদিগকে বিনীতভাবে কহিলেন যে, সুমন্ত্র দ্বারদেশে উপস্থিত তোমরা এই সংবাদ রাজকুমারকে নিবেদন কর । তাহারা শ্ৰুতমাত্রে সস্ত্রীক রামের নিকটে এই বাৰ্ত্ত জানাইল । পিতৃবৎসল রাম পিতৃহিতার্থে তাহার অন্তরঙ্গ সুমন্ত্রকে তৎক্ষণাৎ আনয়ন করাইলেন। তিনি গৃহে প্রবিষ্ট হইয়া দেখিলেন, উত্তরচ্ছদশোভিত সুবৰ্ণপৰ্য্যঙ্কে কুবেরের ন্যায় রামচন্দ্র উপবিষ্ট আছেন। তদীয় কলেবর বরাহ-রুধিরের স্যায় অতিলোহিতবর্ণ সুগন্ধি চন্দনে অনুলিপ্ত, সৌগন্ধময় রক্তচন্দনে চর্চিত। র্তাহার পার্থে জানকী চামরহস্তে উপবিষ্ট, দেখিলে বোধ হয়, যেন চিত্রার সহিত চন্দ্রমা সন্মিলিত হইয়াছেন। ১-১০ তখন বন্দিজনোচিত-বিনয়াভিজ্ঞ সুমন্ত্র অতি বিনীতভাবে অনন্যসাধারণ নিজ তেজে সমুদ্ভাসিত, সমুজ্জ্বল আদিত্যের স্যায় অবস্থিত সেই রামচন্দ্রকে বন্দন৷ করিয়াছিলেন। তিনি রামকে সুখশয্যায় উপবিষ্ট দেখিয়া তাহাকে এই কথা বলিতে লাগিলেন,—হে কৌশল্যানন্দন ! দেবী কৈকেয়ী ও মহারাজ আপনাকে দেখিতে ইচ্ছা করিয়াছেন ; অতএব কালবিলম্ব না করিয়া শীঘ্ৰ আগমন করুন। রাম এই কথা শ্রবণ করিয়া অতিশয় আনন্দিত হইলেন। তিনি তখন