পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অযোধ্যাকাও সীতার দিতে থাকিবেন। আমাদের বোধ হয়, ললনারঞ্জ সীতা সকল রমণীর শ্রেষ্ঠ, জন্মান্তরীণ পুণ্য ব্যতিরেকে ঐরুপ সৌভাগ্য লাভ করিতে পারে মা ! সীতা রামের হৃদয়ধন ; বলিতে গেলে তিনি নিশ্চয়ই পূৰ্ব্বজন্মে মহাতপস্যা করিয়াছিলেন। রোহিণী যেরূপ চন্দ্রের অনুগামিনী, তাহার ন্যায় সীত সীতাপতির জীবনসৰ্ব্বস্ব। প্রাসাদশিখরে আরোহণ করিয়া প্রমদাগণ এরূপ প্রিয়বাক্য বলিতেছেন, রামচন্দ্র যাইতে যাইতে উহা শুনিতে পাইলেন। ২৬-৪২ রামচন্দ্র এই প্রকার সুখকর বচন-পরম্পরা শ্রবণ করিতে করিতে গমন করিলেন । যাইতে যাইতে তিনি এক স্থানে বহুসংখ্যক লোকদিগের এরূপ কথোপকথন শুনিতে পাইলেন,– এই রাজপুত্র রাজপ্ৰসাদে রাজশ্ৰী পাইবার জন্য পিতৃগৃহে গমন করিতেছেন, যখন ইনি রাজা হইবেন, তখন আমাদের সুখের সীমা থাকিবে না । ইনি যে যুগপৎ নিখিল রাজভার গ্রহণ করিতেছেন, ইহাই আমাদের পরম লাভ। ইহার অধিকারে কখনও কোনও রূপ অনিষ্ট দর্শন করিতে হুইবে না। অনন্তর রামচন্দ্ৰ সকলের মুখে এইরূপ গুণকীৰ্ত্তন শ্রবণ এবং জয়, জীব ইত্যাকার মঙ্গলশব্দ উচ্চারণকারী স্থত,মগধ ওবন্দিগণেরস্তুতিবাদ আকর্ণনপূর্বক কুবেরের ন্যায় পিতৃভবনে গমন করিতে লাগিলেন। হস্তী, হস্তিনী, রথ, অশ্ব, বিপুল জনতা দ্বারা চতুষ্পথ সকল পরিপূর্ণ হইয়াছে, এবং উভয় পাশ্বে মহামূল্য দ্রব্যে সুসজ্জিত বিপণিশ্রেণী—এইরূপ রাজপথ রামচন্দ্ৰ দেখিয়াছিলেন । ৪৩-৪৭ αμυοπας সপ্তদশ সর্গ রামচন্দ্র রথারোহণে রাজপথে প্রবেশ করিলেন। দেখিলেন, সর্বত্রই অগুরুধুপগন্ধে আমোদিত, স্থানে স্থানে ধ্বজপতাকা সুশোভিত্ব । সর্বত্রই লোকাকীর্ণ, মেঘ সদৃশ শুভ্র উন্নত গৃহ দ্বারা ➢ፃ Sశిసె উপশোভিত। স্থানে স্থানে পট্টবসনসমূহ মন আকর্ষণ করিতেছে ; চন্দন, অগুরু ও অন্যান্য গন্ধদ্রব্যে সকল স্থানই গন্ধময় । মধ্যে মধ্যে মুক্তাস্তবক ও স্ফটিকমণি বিরাজিত। রাজপথের স্থানে স্থানে কুসুমরাশি বিকীর্ণ ও মঙ্গলাচারার্থ নানাবিধ পুষ্প ও নানাজাতীয় খাদ্যদ্রব্য সকল সংন্যস্ত রহিয়াছে। স্বরলোকে মুরপতির স্যায় রাম দধি, অক্ষত, হবিঃ, লাজাঞ্জলি ও নানাবিধ মাল্যগন্ধ দ্বারা সুশোভিত চত্বর সকল দেখিলেন । এই সময়ে অসংখ্য লোক র্তাহাকে দর্শন করিয়া আশীৰ্বাদ করিতে লাগিলেন। রামচন্দ্র সেই আশীৰ্বর্ণাদ-বাক্য শ্রবণ করিতে করিতে যথাযথভবে র্তাহীদের অভ্যর্থনা করিয়া গমন করিলেন । তাহারা কহিলেন, রাজকুমার! অদ্য তুমি রাজ্যভিষিক্ত হইয়া তোমার পূর্বপুরুষগণের স্যায় আমাদিগকে পালন কর। তোমার পূর্বপুরুষদিগের অধিকারে আমরা যেরূপ সুখী ছিলাম, তোমার শাসনেও সেইরূপ সুখী হইতে পারিব। অধিক কি বলিব, যদি তোমাকে অভিষিক্ত ও পিতৃভবন হইতে নিৰ্গত হইতে দেখিতে পাই, তাহা হইলে আমরা ইহ ও পরলোকের মুখ প্রার্থনা করি না । ১-১০ বাস্তবিক অমিততেজা রামচন্দ্রের অভিষেক অপেক্ষা আর আমাদের প্রিয়বস্তু কিছুই নাই। সুহৃদগণের মুখে এরূপ প্রশংসাবাদ শ্রবণ করিয়া, রাম অবিকৃতান্তঃকরণে গমন করিতে লাগিলেন। যদিও তিনি সকলের দৃষ্টিপথ অতিক্রম করিয়া চলিলেন, তথাপি কেহই মন ও চক্ষু তাছা হইতে অপসারিত করিতে পারেন নাই। ফলতঃ, যে র্যক্তি রামকে দর্শন না করে, অথবা রাম যাহার প্রতি দৃষ্টিসঞ্চালন না করেন, সে ব্যক্তি স্বজনের নিকটে নিন্দিত হয় এবং আত্মাকে হেয় বোধ করিয়া থাকে। ধাৰ্ম্মিক রামচন্দ্র চাতুর্বর্ণ্য সকলকেই সমষ্টিতে দর্শন করেন বলিয়া সকলেই তাহার অমুগত ছিল। তদনন্তর রাম চতুষ্পথ, চৈত্য, দেবালয় ও আয়তন সকল দক্ষিণ