পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অযোধ্যাকাণ্ড দেখিতেছি, তোমার ঘোর দুরাশা উপস্থিত, কি আশ্চৰ্য্য, নিরপরাধা জনকনন্দিনীকে পর্য্যন্ত চীরধারিণী করিতে ইচ্ছা করিয়াছ ! যাহা হউক, এ অপরাধে তোমাকে নরকগামিনী হইতে হইবে।* সীতাসম্বন্ধে এইরূপ কথা কহিলে, রামচন্দ্র অবনতভাবে অবস্থিত নৃপতি দশরথকে কহিলেন;–হে ধৰ্ম্মব্রত পিতৃদেব ! আমার জননী যশস্বিনী কৌশল্য অতিশয় প্রাচীন হইয়াছেন ; ইনি আমার বনপ্রস্থান জানিয়া, আপনার বিরুদ্ধে যে কোনও প্রকার বাঙ নিস্পত্তি করিতেছেন না, তাহাতে ইলার উদার স্বভাবের পরিচয় দেওয়া হইয়াছে। হে বরদ ! ইনি শোক-দুঃখ কাহাকে বলে, তাহ অবগত নহেন । আমি বনগামী হইলে আমার জন্য ইনি শোকসমুদ্রে মগ্ন হইবেন ; অতএব প্রার্থনা, সময়ে আপনি ইহার সমুচিত সন্মাননার ক্রটি করিবেন না। হে ইন্দ্রকল্প নৃপতে ! আমাকে চক্ষের অন্তরালে রাখা জননীর অভিপ্রেত নহে । আপনার নিকটে প্রার্থনা, আমি বনবাসী হইলে, আমার বিয়োগে যেন ইহার প্রাণত্যাগ না ঘটে। ৯-১৫ একোনচত্বারিংশ সগ মহারাজ দশরথ রামমুখে এরূপ উক্তি শ্রবণ ও সাক্ষাতে র্তাহাকে মুনিবেশধারী দর্শন করিয়া ভাৰ্য্যাদিগের সহিত অচৈতন্য হইলেন। সে সময়ে তাহার দুঃখাবেগ এতদূর বৃদ্ধি পাইয়াছিল যে, রামের প্রতি তিনি চাহিয়া দেখিতে পারিলেন না। যদিই বা কষ্টে-স্থষ্টে চাহিয়া দেখিলেন, কিন্তু কিছুই বলিতে পারিলেন না, তিনি দুঃখিতমনে রাম-বিষয় চিন্তা করিতে করিতে মুহূৰ্ত্তকাল অচেতন হইয়া পড়িলেন।

  • কোনও কোনও গ্রন্থে এই অধিক পাঠ কৃষ্ট হইয়া থাকে।

“ইতীব রাজা বিলপাহা শোকত নান্তংস দার্শকিঞ্চিঃ। इलांडूबचांक्र °गांउ डूप्यो cठरेनव गूजवानप्नन भधः ॥” २२ ।। ১৬৯ তদনন্তর সংজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া নানাপ্রকারে বিলাপ করিতে লাগিলেন ;–আমার বোধ হয়, পূর্বে আমি অনেক গাভীকে বৎসহীন করিয়াছি, আমি জীবহিংসার ক্রটি করি নাই,সেই জন্যই আমার এই দুর্দশা ঘটিয়াছে। আমার সম্মুখে দাপ্তাগ্নিতুল্য রামচন্দ্র মুনিবেশ ধারণ করিলেন, যখন স্বচক্ষে ইহা দর্শন করিয়াও আমার মৃত্যু হইল না, তখন বুঝিলাম, সময় না হইলে জীবের মৃত্যু হইবার নহে ; যদি তাহা হইত, তাহা হইলে, কৈকেয়ীর যন্ত্রণ আমার মৃত্যুর কারণ হইতে পারিত। আমি এক্ষণে বুঝিলাম, স্বার্থসাধিনী একাকিনী কৈকেয়া হইতে সাধারণের এতদূর কষ্ট-স ঘেটন হইল। নৃপতি এই কথা বলিলে, তাহার দুই চক্ষু হইতে দরদরিত ধারা নিপতিত হইল। রাজা “রাম” এই শব্দ একবারমাত্র উচ্চারণ করিয়া আর কিছুই বলিতে পারিলেন না। তদনন্তর মুহূৰ্ত্তকাল মনোমধ্যে শোকাবেগ সংবরণ-পূর্বক সজলনয়নে দীনবচনে সুমন্ত্রকে কছিলেন,—১-৯ সুমন্ত্র । রাজবাহনের উপযুক্ত সুন্দর রথে অশ্ব সকল সংযোজিত করিয়া লইয়া আইস এবং তাহাতে আরোহণ করাইয়া রামচন্দ্রকে জনপদের বহিঃপ্রদেশে রাখিয়া আইস । আমার মনে হয়, পিতা-মাতা একজন সাধু সন্তানকে অনায়াসে নির্বাসন করিলেন, গুণবানদিগের গুণের ইহাই উৎকৃষ্ট পরিচয় । রাজার আজ্ঞাপ্রাপ্তিমাত্র স্থমন্ত্র দ্রুতপদে গমন-পূর্বক স্বন্দর অশ্বসংযোজিত রথ প্রস্তুত ও সজ্জিত করিয়া রাজকুমারের নিকটে কৃতাঞ্জলিপুটে তৎসংবাদ বিজ্ঞাপন করিলেন। তখন নরনাথ ধনাধ্যক্ষকে আহবান-পূর্বক আদেশ দিলেন, তুমি সত্ত্বর বর্ষ গণনা করিয়া জানকীর জন্য উৎকৃষ্ট বসন ও আভরণ আনয়ন কর। নৃপতির আদেশ প্রাপ্তিমাত্র ধনাধ্যক্ষ কোষাগারে গমন-পূর্বক আদেশানুযায়ী যাবতীয় সামগ্ৰী গ্রহণ করিয়া সম্বর সীতাহস্তে তত্তাবৎ প্রদান করিলেন। অযোনিজ জানকী সেই সকল উৎকৃষ্ট বিভূষণ ধারণ করিয়া