পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२०२ দশরথপত্নীগণ প্রাসাদ হইতে বিলাপধ্বনি করিতেছেন । ১১-২০ র্তাহারা বলিতেছেন,—সুমন্ত্র রামের সহিত নগর হইতে নিৰ্গত হইয়া এক্ষণে রাম বিনা উপস্থিত হওয়াতে, রোদনকারিণী কৌশল্যাদেবীকে কি প্রত্যুক্তর প্রদান করিবেন ? আমরা বিবেচনা করি, জীবন ধারণ করা যেরূপ সুখসাধ্য নহে, মৃত্যুও সেইরূপ সহজে হয় না। দেখ, প্রিয়তম তনয় রামচন্দ্র নির্বাসিত হইলেও কৌশল্য জীবনধারণ করিতেছেন। রাজমহিষীগণের তাদৃশ বাক্য শ্রবণ করত সুমন্ত্রসারধি শোকাগ্নি দ্বারা দহমান হইয়া রাজভবনের অভ্যন্তরে প্রবিষ্ট হইলেন। তিনি একান্ত কাতর-হৃদয়ে অষ্টম কক্ষে প্রবিষ্ট হইয়া পুত্ৰশোকে নিমগ্ন, অভিভূত ও একান্ত-দীনভাবাপন্ন মহারাজ দশরথকে শুভ্রবর্ণ গৃহে অবস্থিত দর্শন করিলেন। তখন উপবিষ্ট রাজার সম্মুখে যাইয়া, তাহাকে অভিবাদন করিয়া, রাম যাহা যাহা বলিয়াছিলেন, সেই সমুদয় অবিকল নিবেদন করিলেন। রাজা নিস্তব্ধভাবে সকলই শুনিলেন। শুনিয়া শোকে তাহার হৃদয় গলিয়া গেল। তখন পুত্ৰশোকে একান্ত অভিভূত হইয়া,তিনি মূচ্ছিত ও ভূমিতে পতিত হইলেন। রাজা মুচ্ছ গিয়াছেন এবং ভূমে পড়িয়া আছেন দেখিয়া, সমস্ত অতঃপুরিকাই দুঃখে অভিভূত হইয়া, বাহু বিস্তার করিয়া, চীৎকার করিয়া উঠিল । তখন কৌশল্য, স্থমিত্রাকে সঙ্গে করিয়া, ভূ-পতিত পতিকে উঠাইলেন ও বলিতে লাগিলেন, মহাভাগ। এই সুমন্ত্র দুষ্করকশ্বকারী রামের দূত-স্বরূপ বনবাস হইতে আপনার নিকট আসিয়াছে। আপনি কি জন্য ইহার সহিত বাক্যালাপ করিতেছেন না ? পুত্রকে বনবাসে দিয়া এখন কি জন্য লজ্জিত হইতেছেন ? উঠুন, আপনার সত্যপরিপালনরূপ পুণ্য হউক। আপনি শোক করিলে আপনার সহায়স্বরূপ এই পরিজন সকল আপনার শোকে বিনাশপ্রাপ্ত আইৰে । হে দেব । বাহাকে ভয় করিয়া সারথিকে বাল্মীকি-রামায়ণ রামের কথা জিজ্ঞাসা করিতে কুষ্ঠিত হইতেছেন, সেই কৈকেয়ী ত এখন নিকটে নাই। অতএব নিঃশঙ্ক হইয়া সারথির সহিত কথাবার্তা বলুন। শোকাতুর কৌশল্যা বাষ্প-গদগদবাক্যে মহারাজ দশরথকে এই কথা বলিয়াই ভূমিতে পড়িয়া গেলেন। কৌশল্য বিলাপ করিতে করিতে ভূপতিত হইলেন এবং তাহার পতিকেও তদবস্থ দেখিয়া, অন্যান্য মহিষীগণ সকলেই চতুর্দিক হইতে রোদন করিতে লাগিলেন। র্তাহাদিগের সেই রোদনশব্দে তত্ৰত্য বৃদ্ধ ও যুবা পুরুষ এবং অপরাপর মহিলাগণ রোদন করিতে লাগিল । তৎকালে সেই অন্তঃপুর রোদনশব্দে পুনর্বার ব্যাপ্ত श्ब्रां ऊँठेिव्न ।। २२-७8 অষ্টপঞ্চাশৎ সর্গ অনন্তর মোহ বিগত হইয়া রাজা আশ্বস্ত ও সংজ্ঞালাভ করিলে, তিনি রামের বৃত্তান্ত জানিবার জন্য সারথিকে আহবান করিলেন। স্বমন্ত্র কৃতাঞ্জলিপুটে দুঃখ-শোক-সমন্বিত, রামের নিমিত্ত অমুশোচনাপরায়ণ , মহারাজের নিকট উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন, মহারাজ যার পর-নাই সন্তপ্ত হইয়া, নূতন ধৃত হস্তীর স্যায়, ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলিতেছেন । র্তাহার মনও অনুস্থ কুঞ্জরের ন্যায় চিন্তায় মগ্ন হইয়াছে। সুমন্ত্রের দেহ ধূলায় আচ্ছন্ন, মুখ অশ্রুসলিলে পূর্ণ এবং আকার যার-পর-নাই ব্যাকুলভাবাপন্ন। রাজা অতিশয় কাতর বাক্যে র্তাহাকে বলিলেন,—মুমন্ত্র ! সেই নিতান্ত মুখোচিত ধৰ্ম্মাত্মা রাম এক্ষণে বৃক্ষমূল আশ্রয় করিয়া কোথায় থাকিবেন এবং ভোজনই বা কি করিবেন ? হে স্থত। রাম দুঃখের মুখ কখন দেখেন নাই ; কিন্তু এখন তেমনি দুঃখে পড়িলেন । তথায় শয়নোচিত শয্যা নাই, অতএব রাজার পুত্র হইয়া কিরূপে অনাথের স্থায় ভূমিতে শয়ন করিবেন ? যিনি গমন করিলে পদাতি, রথ ও হস্তী সকল গঙ্গে সঙ্গে